দেশে ফিরেই ক্ষোভের মুখে নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর শেষ করে দেশে ফিরতে না ফিরতেই তোপের মুখে পড়লেন। মোদির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ মোদির বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে সমালোচনা করে জানিয়েছেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের (আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মণিপুর) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উপেক্ষা করা মূলত যুক্তরাষ্ট্রীয় (ফেডারেল) নীতির পরিপন্থী। মোদির এই উপেক্ষার মনোভাবে মনে হচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতিতে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর কোনো ভূমিকাই নেই।
যদিও গগৈর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মহল সূত্রে অভিমত, এর আগে বেশ কয়েকটি সফরে ওই অঞ্চলের কংগ্রেস কিংবা বামপন্থী মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁরা মোদির সঙ্গী হননি। যে কারণেই বাংলাদেশ সফরে গগৈকে নেওয়া হয়নি। তবে গগৈর এই মন্তব্য ভারতের জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে ব্রাত্য রাখার বিতর্ক উসকে দেওয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে মোদি-মমতার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিকেও খুঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এবার বাংলাদেশ সফরে মোদির সফরসঙ্গী ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে মমতা গত ইউপিএ সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে যেতে অস্বীকার করেছিলেন, সেই মমতাই এবার মোদির সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে যাওয়ায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে কাটা-ছেঁড়া শুরু হয়েছে। মোদি-মমতার সখ্য এবং তাঁদের একসঙ্গে বাংলাদেশ যাওয়াকে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল তোপ দাগতে ছাড়েননি। এবার তরুণ গগৈও রাহুলের রাস্তা ধরে বিষয়টিকে ফের উসকে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মোদির একচোখা নীতিকে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে নিজেদের রাজনৈতিক জমি শক্ত করার কূট কৌশল হিসেবে এই মন্তব্য বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তরুণ গগৈ ছাড়াও ত্রিপুরার বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার জন্য মোদি আমন্ত্রণ জানাননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক সংকীর্ণতা বলেও উল্লেখ করেছেন ত্রিপুরার পঞ্চায়েতমন্ত্রী মানিক দে।