ইরান-কুয়েত দ্বন্দ্বে আবার উত্তপ্ত আরব দুনিয়া
মধ্যপ্রাচ্যে কাতারের সঙ্গে সৌদি জোটের দ্বন্দ্ব পুরোনো খবর। আরব বিশ্বের এই সমস্যাটি সমাধানের আলো দেখতে না দেখতেই ইরানের সঙ্গে কুয়েতের দ্বন্দ্বে আবার উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতি।
সমস্যার সূত্রপাত গত ২০ জুলাই। ওই দিন ‘গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড চালানো ও সন্ত্রাসে মদদ’-এর অভিযোগে ইরানি রাষ্ট্রদূত ও ১৪ জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে কুয়েত। দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ওই কূটনীতিকদের মাত্র ৪৫ দিন সময় দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ইরানে সাংস্কৃতিক ও সামরিক মিশন বন্ধ করার ঘোষণা দেয় দেশটি।
যদিও এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটির সম্পর্ক অম্লমধুরই ছিল। তবে আরব বিশ্বে প্রচলিত ঝগড়া-ফ্যাসাদের রাজনীতি এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে কুয়েতের সুনাম ছিল। আর তাই সম্ভবত কুয়েতের আমিরের ওই সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক হতাশা ব্যক্ত করেছিল তেহরান।
এদিকে ওই ঘটনার প্রায় চারদিন পরে কুয়েতের আদেশের জবাবে ইরান জানিয়েছে, কুয়েত থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করবে না দেশটি। কারণ হিসেবে দেশটি জানায়, ইরানিয়ান রেভুল্যুশনারি গার্ডের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যে যোগাযোগের কথা বলেছিল কুয়েত- সেটি একেবারেই কল্পনাপ্রসূত। আর তাই ইরান বিষয়টি মেনে নিয়ে কুয়েত ছেড়ে চলে আসবে না। কূটনৈতিকভাবেই কুয়েতের বহিষ্কারাদেশের জবাব দেওয়া কথা জানিয়েছে তেহরান।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম গাসেমি এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, কুয়েতের কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি আমরা। কারণ সব সময়ই পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে কুয়েতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল আমাদের। এবার কিছু ভুল বোঝাবুঝি হলেও বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করি আমরা। এ সমস্যা সমাধানে ইরান প্রচলিত কূটনৈতিক রীতি ও ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রয়টার্স জানায়, গত বছরের শেষভাগে ইরান ও লেবাননের ‘জঙ্গি সংগঠন’ হেজবুল্লাহর হয়ে গোয়েন্দাগিরি করার জন্য ২৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল কুয়েত। এদের মধ্যে মাত্র একজন কুয়েতের নাগরিক হলেও বাকিদের কুয়েতের দূতাবাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল। তবে ইরান বরাবরই কুয়েতের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।