গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক পরিবারের সাত শিশু নিহত
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ভূখণ্ডটির উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে গতকাল শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) একটি পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে সাতজনই শিশু। খবর এএফপির।
ইসরায়েল ও হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে গত ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বারবার কেঁপে ওঠেছে উপকূলীয় এই ভূখণ্ডটি। ইসরায়েল ও হামাসের ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে অস্ত্রবিরতির প্রতিনিয়ত উদ্যোগের মধ্যেও থেমে নেই এই যুদ্ধ।
হামলার বিষয়ে গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাশাল বলেন, ‘১০ জন শহীদ হয়েছে। জাবালিয়ার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জাবালিয়া আল-নাজলা এলাকায় নিজেদের ঘরে থাকার সময় এদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়। শহীদ হওয়া প্রতিটি লোক এই পরিবারের। এদের মধ্যে সাত শিশুও রয়েছে, সবচেয়ে বড় শিশুটির বয়স ছয় বছর।’ তিনি জানান, হামলায় আহত হয়েছে আরও ১৫ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, হামাসের মালিকানাধীন একটি সামরিক অবকাঠামোতে তৎপরতা চালানোর সময় বেশ কয়েকজন ‘সন্ত্রাসী’কে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। সেখানে থাকা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) জন্য তাদের হুমকি হিসেবে দেখা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আইডিএফের কাছে এখনও আসেনি।
এ বছরের অক্টোবর মাসের শুরু থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামাসের যোদ্ধাদের সংগঠিত হওয়া থেকে বিরত রাখতে গাজার উত্তরে ব্যাপক অভিযান শুরু করে।
চলতে থাকা সংঘাতের মধ্যেই যুদ্ধ থামাতে এবং হামাসের হাত থেকে জিম্মি করা বন্দিদের মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনাও হয়। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে তাদের ‘সাবধানী আশাবাদ’ প্রকাশ করে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এক নজীরবিহীন হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০৮ জনকে হত্যা করে। এ ছাড়া আরও ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। এদের মধ্যে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ৩৪ জন সদস্যও রয়েছে।
এরপর থেকে গাজায় হামলা চালাতে থাকে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত
৪৫ হাজার ২০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘও বলেছে নিহতের এই সংখ্যা বিশ্বাসযোগ্য।