চেয়ার অন্যের চেয়ে বড়, তাই বসেননি ড. কালাম!

একদিন এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. এ পি জে আবদুল কালাম। তিনি তখন ভারতের রাষ্ট্রপতিও। অনুষ্ঠানে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট চেয়ার ছিল। কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, ওই চেয়ারে বসবেন না। কারণ, অন্য সব চেয়ারের চেয়ে তাঁর চেয়ারটি কেন বড়!
urgentPhoto
ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ খ্যাত বিজ্ঞানী ও একাদশ রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম এমন সাধারণ জীবনযাপনের জন্য পরিচিত।
উল্লিখিত ঘটনাটি ঘটে ভারতের উত্তর প্রদেশের বানারসের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি) এক অনুষ্ঠানে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আবদুল কালাম ছিলেন এর প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানের মঞ্চে পাঁচটি চেয়ার রাখা হয়েছিল, যার একটি প্রধান অতিথির আর বাকি চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শীর্ষ কর্মকর্তার। প্রধান অতিথি হিসেবে আবদুল কালামের চেয়ারটি ছিল অন্য চারটির তুলনায় বড়। তিনি ওই চেয়ারে বসতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে (ভিসি) সেখানে বসতে বলেন। ভিসিও ওই চেয়ারে বসেননি। পরে দ্রুত ‘জনগণের রাষ্ট্রপতি’র জন্য একটি চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবেও কম যান না আবদুল কালাম। একবার তিনি দেয়ালের ওপর ভাঙা কাচ লাগানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর মতে, নিরাপত্তার জন্য দেয়ালের ওপর ভাঙা কাঁচ লাগানো হলেও এটি পাখিকুলের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘটনাটি ঘটেছিল যখন তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (ডিআরডিও) কাজ করেন, সে সময়ে। গবেষণাগারের নিরাপত্তা বাড়াতে দেয়ালের ওপর ভাঙা কাচ লাগানোর চিন্তা করছিল তাঁর দল। কালাম প্রতিবাদ করেন, ‘আমরা দেয়ালের ওপর ভাঙা কাচ লাগালে সেখানে পাখি দাঁড়াতে পারবে না।’
তরুণ ও যুবকদের অনুরোধে সব সময়ই সাড়া দিতেন আবদুল কালাম। মুখে স্মিত হাসি নিয়ে নিজের মূল্যবান সময়ের মধ্যে থেকেই তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মনোযোগ দিয়ে তরুণ ও যুবকদের চিন্তার কথা শুনতেন আবদুল কালাম।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে কালামের প্রথম সফর ছিল কেরালার রাজ্যের রাজধানী থিরুভানান্তপুরাম (আগের নাম ত্রিবান্দ্রম)। রাষ্ট্রপতি হিসেবে যে কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে পারতেন আবদুল কালাম। তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাস্তার পাশের এক মুচি ও ছোট একটি হোটেলের মালিককে। বিজ্ঞানী হিসেবে থিরুভানান্তপুরাম থাকার সময় ওই দুজনের সঙ্গে কালামের ভালো সম্পর্ক ছিল।