ভারতে পর্নো ডিভিডি বিক্রির ধুম, দাম আকাশচুম্বী
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/05/photo-1438767495.jpg)
ভারতে পর্নো সিডি ও ডিভিডি বিক্রির ধুম পড়েছে। দেশটিতে ইন্টারনেটে পর্নোসাইট বন্ধের একদিন না পেরোতেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদা অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে গোপনে ভারতজুড়ে বেশ উচ্চদামেই বিক্রি হচ্ছে পর্নো সিডি ও ডিভিডি।
ইন্টারনেটে প্রাপ্তবয়স্কদের কোনো কিছু ডাউনলোডের সুযোগ না থাকায় অনেক ব্যক্তি ও খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন পাইকারি বাজারে ভিড় করছেন। নয়াদিল্লির পালিখা বাজার, লাজপাতনগর, পাহাড়গড়ের মতো পাইকারি বাজারগুলোর ডিভিডি বেচাবিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহেও বাজারে একটি পর্নো ডিভিডির দাম ছিল ১০০ রুপি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা দাঁড়িয়েছে ৩০০ রুপি। একটি ৩০০ রুপির ডিভিডির ধারণক্ষমতা হয় আট গিগাবাইট (জিবি)। এমন ডিভিডির মধ্যে ১০ থেকে ১২টি ক্লিপ থাকতে পারে।
কলকাতায় পর্নো সিডির দাম ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। কলকাতার পার্ক সার্কাসের এক বিক্রেতা বলেন, আগে একটি সিডি বিক্রি হতো ২০ রুপিতে। এখন এর দাম হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ রুপি। এমএমএস ক্লিপের দাম সবচেয়ে বেড়েছে। বর্তমানে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ রুপিতে। আর ইংরেজি পর্নো ডিভিডি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ রুপিতে।
লখনৌতে পর্নো ডিভিডির ক্রেতাদের সূত্রে জানা গেছে, সিডি ও ডিভিডির দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। নাকা অঞ্চলের প্রিত ও আম্বার বাজার এবং হজরতগঞ্জের নাজা বাজারে প্রকাশ্যেই কম্পিউটার পণ্য ও সিডি বিক্রি হয়। বিভিন্ন বাজার থেকে আসা খুচরা বিক্রেতা পর্নো সিডি ও ডিভিডি কিনছেন।
বেঙ্গালুরুর ডিভিডি বিক্রির চেয়ে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) চাহিদা বেড়েছে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের কার্যকর করা নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে যে কোনো ওয়েবসাইটে ঢোকা যায়। ন্যাশনাল মার্কেটের ডিভিডির এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চাহিদা কমে থাকায় ধীরে ধীরে ডিভিডির মজুদ তারা কমিয়ে ফেলেন। তবে পাইকারি বিক্রেতারা মনে করেন, শিগগিরই নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলা হতে পারে। তাই মজুদের দিকে তাঁদের কোনো আগ্রহ নেই।
বেঙ্গালুরুর অ্যাভিনিউ মার্কেটের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, অনেকেই ভিপিএনের জন্য আসছে। মজার বিষয় হলো তারা এদের অনেকে এর ব্যবহারই জানেন না।
নিষেধাজ্ঞার কারণে সিডি-ডিভিডি কেনায়ও সমস্যায় পড়ছেন ভোক্তারা। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে সিডি-ডিভিডির কাভার তুলে ফেলা হয়েছে। তাই বোঝার উপায় নেই সেখানে কী আছে। পরীক্ষা করে দেখারও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। ‘নষ্ট বা না চললে ফেরত দিয়ে আরেকটি সিডি/ডিভিডি’ এমন চুক্তিতে কাজ করছেন অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা। মুম্বাই ও চেন্নাইয়ে এখনো কম দামেই পর্নো সিডি/ডিভিডি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।
গত শনিবার মধ্যরাত থেকে ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পর্নো সাইট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে দেশটির সরকার এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। আর ভারতে গত কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেটে পর্নো সাইট দেখতে না পাওয়ার জেরে দেশটিতে তীব্র অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমেও উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়।
গত জুলাই মাসেই ভারতে পর্নো সাইট বন্ধ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এক আদেশে বলেছিলেন, ‘কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যদি ঘরে বসে পর্নো সাইট দেখেন, তাহলে তাঁকে আটকানোর উপায় নেই। জোর করে তাঁকে আটকানো মানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২১+ আইনের অবমাননা করা।’
ভারতের তথ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় টেলিকম সূত্রে বলা হয়েছে, বিষয়টি যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে রয়েছে তাই আপাতত সাইটগুলো লগ ইন করা যাচ্ছে না। ২০১৩ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মোট ৮৫৭টি পর্নো সাইট নিষিদ্ধ করার জন্য ইন্টারনেট সেবাদাতাদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।