হাঙ্গেরি ও সার্বিয়ায় অভিবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
হাঙ্গেরি ও সার্বিয়ার সীমান্তে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশী মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল সোমবার এই ঘটনা ঘটে। তবে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
হাঙ্গেরি ও সার্বিয়া সীমান্তে থাকা শরণার্থীদের বেশির ভাগই এসেছে ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে। সীমান্তের রোসকে এলাকায় কয়েকদিন ধরেই অপেক্ষায় ছিল শরণার্থীরা। সামন্য কয়েকটি বাসে অল্প সংখ্যক শরণার্থীকে নেওয়া হচ্ছিল। রোসকে এলকায় প্রায় তিনদিন ধরে অবস্থান করছিল অনেক শরণার্থীরা। মানবেতর জীবন যাপন করা শরণার্থীরা হেঁটেই পুনরায় যাত্রা শুরু করতে চাইলে পুলিশ এতে বাধা দেয়। এতেই সংঘর্ষ বাঁধে। তবে বড় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কয়েকদিন ধরেই রোসকে এলাকার শরণার্থী শিবিরে হাঙ্গেরির একটি অলাভজনক সংগঠন বিস্কুট, ফল ও পানি বিতরণ করে। এ ছাড়া একটি সেবাকেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, শরণার্থীদের আগমনের হারের সঙ্গে পেরে উঠছে না বলে জানিয়েছে অস্ট্রিয়া ও জার্মানি। দেশগুলো শরণার্থী আগমনের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী অনেক শরণার্থী অভিযোগ করে পদে পদে তারা নির্যাতনের মুখে পড়েছে। দুঃস্বপ্নের মতো ভূমধ্যসাগর পারি দেওয়ার পরও হেঁটে গ্রিস থেকে মেসেডোনিয়া, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি ও সবশেষে অস্ট্রিয়া। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য, শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেক অস্ট্রীয় শরণার্থীদের জন্য খাবার ও পানি নিয়ে অপেক্ষা করে। শরণার্থীদের জন্য বাস ও ট্রেনের ব্যবস্থাও করা হয়। সম্প্রতি অস্ট্রিয়ায় আসা এক সিরীয় শরণার্থী তাদের পরিবারের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন, দুই মেয়ে নিয়ে ১১০ কিলোমিটার হেঁটে এসেছেন তাঁরা। কোনো গাড়ি বা ট্রেনে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। তবে হাঙ্গেরির মানুষ তাঁদের প্রতি যথেষ্ট বন্ধুসুলভ ছিল। আর অস্ট্রিয়ায় আসার পর অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে।
গত সোমবার অস্ট্রিয়া পুলিশের মুখপাত্র ওলফগ্যাং ব্যাংকোয়িং বলেন, শনিবার পর্যন্ত ১৬ হাজার শরণার্থী অস্ট্রিয়া পৌঁছেছে। তবে শরণার্থীদের লক্ষ্য জার্মানি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার শরণার্থী জার্মানি পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, চলতি বছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ শরণার্থী ভূমধ্যসাগর পারি দিয়েছে। এর মধ্যে যাত্রাপথেই মৃত্যু হয়েছে আড়াই হাজার মানুষের। আর শেষ পর্যন্ত ইউরোপে তাদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।