জলদস্যুদের হাতে বন্দিরা ইঁদুর খেয়ে বেঁচেছেন
‘জলদস্যুরা আমাদের শুধু খাবার পানি দিত, তাও সামান্য পরিমাণে। আমরা ইঁদুর খেতাম। জঙ্গলে এটি রান্না করতাম। আমাদের অবস্থা ছিল প্রাণহীন হেঁটে চলার মতো।’
সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে বন্দিদশার এভাবেই বর্ণনা দেন ফিলিপিনো নাবিক আর্নেল বলবেরো। গত শনিবার তিনিসহ ২৬ নাবিক সোমালীয় জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
ফিলিপিনো নাবিক আর্নেল বলবেরো বন্দিদশার বর্ণনা দিয়ে আরো বলেন, ‘ক্ষুধার তাড়নায় আমরা যা পেতাম, তা-ই খেতাম। আর বন্দি থাকা অবস্থায় বিশ্বে কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। অসুস্থ অবস্থায় জলদস্যুদের কাছে ওষুধ চাইলে তারা জানাত, ওষুধ কেনার কোনো অর্থ নেই। এভাবেই দুজনের মৃত্যু হয়েছে।’
২০১২ সালের ২৬ মার্চ ভারত মহাসাগরের সেচেলেস দ্বীপপুঞ্জ থেকে ৬৫ নটিক্যাল মাইল দূর থেকে এফভি নাহাম-৩ জাহাজ দখল করে সোমালীয় জলদস্যুরা। জাহাজটি ওমানের পতাকা ব্যবহার করলেও এর মালিক ছিল তাইওয়ানের একটি প্রতিষ্ঠান। জলদস্যুরা জাহাজটি ডুবিয়ে দিয়ে এর নাবিকদের সোমালিয়ায় নিয়ে যায়।
এফভি নাহাম-৩-এ নাবিক ছিলেন ২৯ জন। তাঁরা ছিলেন ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানের নাগরিক। এর মধ্যে জলদস্যুদের জাহাজ দখলের সময় মৃত্যু হয় একজনের। বন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে আরো দুজনের মৃত্যু হয়।
মুক্তিপণ দেওয়ার পরই এফভি নাহাম-৩ জাহাজের নাবিকদের মুক্তি দিয়েছে সোমলীয় জলদস্যুরা। নাবিকদের কেনিয়ায় মুক্তি দেওয়া হয়।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজের মালিক মুক্তিপণের অর্থ দেওয়ায় নাবিকরা ফিরে এসেছেন। আর তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, জলদস্যুদের সঙ্গে তাইওয়ানের আলোচনা হয়েছে।