পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে এমপি বললেন, ধর্ষণের শিকার হয়েছিলাম
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে আলোচনা চলছিল। আলোচনায় অংশ নিলেন নির্দলীয় সদস্য (এমপি) মিশেল থমসন। তিনি বললেন, ‘মাত্র ১৪ বছর বয়সে আমি ধর্ষণের শিকার হই।’ বিষয়টি নিজের বাবা ও মায়ের কাছে জানাননি তখন। এ রকম পরিস্থিতি চান না মিশেল। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আহ্বান করলেন, নারী এবং সমাজ একে অন্যের জন্য দাঁড়াক, নারী সাহস অর্জন করুক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, মিশেলের বক্তৃতা শুনে প্রশংসা করেছেন স্পিকার জন বার্কাও। তিনি জানান, মিশেল গভীর দাগ কেটেছেন তাঁদের হৃদয়ে।
৫১ বছর বয়সী মিশেল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন এভাবে, ‘আমার বয়স যখন ১৪ বছর তখন আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলাম। খুবই স্বাভাবিক, আমার খুব পরিচিত একজন মানুষই এ কাজটা করেন।’
মিশেল বলেন, ‘তিনি আমাকে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। বিষয়টি স্বাভাবিক। সন্ধ্যার আগে বের হয়েছিলাম। তখনো অন্ধকার হয়নি। আমার পরনে ছিল জিনস ও স্কার্ট। তিনি আমাকে গাছপালা ঘেরা একটা এলাকায় নিয়ে যেতে চাইলেন। বললেন, ওখানে কিছু দেখাবেন। স্বীকার করছি, তখনই মনে খটকা লেগেছিল। কিন্তু ওই খটকা লাগাটা পাত্তা দিলাম না। কারণ তিনি আমার খুবই পরিচিত এবং তাঁর প্রতি আমার বিশ্বাসটা ছিল।’
মিশেল বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি জানতাম না ধর্ষণটা আসলে কী। এটা নিয়ে কথা বলার মতো কিছু ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘সবকিছু চরমভাবে অবশ হয়ে যায়।’
মিশেল বলেন, ‘খুব দ্রুতই সবকিছু হচ্ছিল। প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম। পরে ভয় পেলাম। দেখলাম আতঙ্ক কাটছেই না। পালাতে পারছিলাম না। লোকটা আমার চেয়ে অনেক শক্তিশালী ছিল। লোকটার প্রতি আমার যৌন আকর্ষণ বিন্দুমাত্র ছিল না। এখনো মনে হলে বিদঘুটে লাগে বিষয়টা।’
ওই ঘটনা কাউকে বলেননি মিশেল। বাবা, মা , বন্ধু কাউকে না। ‘আমি আমার নিজের কাছেই রেখে দেই বিষয়টি।’ মিশেল জানালেন, ঘটনার জন্য তিনি নিজেই লজ্জিত হতেন। তিনি বলেন, ‘মনে হতো নিজে নষ্ট হয়ে গেছি।’
ওই ঘটনার পরই ১৪ বছর বয়সে যৌনতা সম্পর্কে আমি বুঝতে পারি। তবে মিশেল চান না কিশোরীদের জীবনে এ রকম দুর্বিষহ অবস্থা হোক। তিনি জানান, নারী ও সমাজকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে সহিংসতার বিরুদ্ধে। নারীকে সাহসী হতে হবে। তিনি বলেন, ‘যেখানে ভুল কিছু ঘটবে আমাদের বলতে হবে, জানাতে হবে। আমাদের ছেলেদের প্রতি আমরা যেরকম যত্ন নেই ঠিক সেভাবে আমাদের বোনদের পাশেও দাঁড়াতে হবে।’