জিম্মি জাহাজ আবদুল্লাহ উদ্ধারে বিমান ও যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল ভারত
জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লাহ নামে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। সেই সাহায্যের আবেদন পেয়ে জাহাজটির কাছে প্রথমে ভারতের একটি নজরদারি বিমান গিয়েছিল। কিন্তু ওদিন (১২ মার্চ) বিমানটি নাবিকদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেনি। মূলত এমভি আবদুল্লাহ থেকে কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি তাদের। আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক বিবৃতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী এসব তথ্য জানায়। খবর এনডিটিভির।
ভারতীয় গণমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ছিনতাই হওয়া জাহাজটিকে গতকাল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ অবরুদ্ধ করে। তখন নাবিকদের অবস্থান ও পরিস্থিতি নিরূপণ করে যুদ্ধজাহাজটি। কিন্তু দস্যুদের কিছু করতে পারেনি তারা। ফলে ছিনতাই হওয়া জাহাজটির পিছু নেয় ভারতীয় নৌ সেনারা। সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত বাংলাদেশি জাহাজটির কাছাকাছি অবস্থান করে ভারতের যুদ্ধজাহাজ।
বাংলাদেশ সময় গত মঙ্গলবার দুপুরে জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে কেবিনে আটকে রাখা হয়েছে। জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
এদিকে, এনটিভি অনলাইনের চট্টগ্রাম দক্ষিণের প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম বাবর জানান, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ খান আজ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইমেইলে এ বার্তা দেন। জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিডেটের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম ও জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠানের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম এ তথ্য জানান। মিজানুল ইসলাম বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক জাহাজে নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি জলদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের জাহাজ ও নাবিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায় আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। সেখানে এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে, জাহাজ এবং নাবিকদেরকে সুস্থভাবে মুক্ত করার জন্য সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, আমরা কোন প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি, সেটি বলতে চাই না। কারণ এটি জনসমক্ষে প্রকাশ করার বিষয় নয়।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাবিক এবং জাহাজ দুটোকেই মুক্ত করা। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজ ২০১০ সালে হাইজ্যাক হয়েছিল। সেটিকে মুক্ত করতে ১০০দিন সময় লেগেছিল। আমাদের প্রচেষ্টার কোন কমতি নেই। আমরা নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, ইনশা আল্লাহ আমরা আশা করছি, অতীতের মতো এবারও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার করতে পারব।