ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধবিমান দিচ্ছে ফ্রান্স
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ফ্রান্স সফরের সময় ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মিরাজ যুদ্ধবিমান সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ এমনকি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণও দিতে চায় ফ্রান্স৷ জেলেনস্কি শুক্রবার ফ্রান্সের সংসদে ভাষণ দেন৷
রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে বার বার অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম চেয়ে আসছেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণে তিনি দেরিতে হলেও কিছু অস্ত্র আদায় করতে পেরেছেন৷ বিশেষ করে আকাশপথে রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে উন্নত এউ-১৬ যুদ্ধবিমানের প্রতিশ্রুতি পেলেও এখনো সেই বিমান হাতে পায়নি ইউক্রেন৷ এবার ফ্রান্স ইউক্রেনকে ‘মিরাজ ২০০০-৫’ মডেলের যুদ্ধবিমান সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিল৷
নাৎসি জার্মানির হাত থেকে ইউরোপকে মুক্ত করার উল্লেখযোগ্য দিন ‘ডি-ডে’-র ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রান্সে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন তিনি৷ ফ্রান্স সফরেও জেলেনস্কি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আরও সামরিক সহায়তার ডাক দিয়েছেন৷ শুক্রবার ফ্রান্সের সংসদের নিম্নকক্ষে ভাষণের আগেই ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তার দেশকে যুদ্ধবিমান সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেন৷ তবে বিমানের সংখ্যা, আর্থিক লেনদেন বা হস্তান্তরের সময় সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি৷ সেই বিমান চালাতে চলতি বছরের গ্রীষ্মেই ফ্রান্সে ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট৷ তার মতে, সেই প্রশিক্ষণ শেষ করতে সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় লাগে৷
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর প্রধান বলেছিলেন, যে মিরাজ যুদ্ধবিমান তার বাহিনীর শক্তি বাড়িয়ে তুলবে৷
ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার নিরিখে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির তুলনায় ফ্রান্সের অবদান এখনো পর্যন্ত অনেক কম৷ জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকে ইউক্রেনের জন্য আরও সক্রিয় হওয়ার ডাক দিচ্ছেন৷ এমন চাপ ও জেলেনস্কির সফর উপলক্ষ্যেই ম্যাক্রোঁ বাড়তি সহায়তার অঙ্গীকার করছেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ তিনি ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রশিক্ষণেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
ম্যাক্রোঁ বলেন, সৈন্যদের প্রশিক্ষণ ইউক্রেনের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে৷ ফ্রান্স তাই ৪,৫০০ সৈন্যের গোটা ব্রিগেডের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিতে চায়৷ সেই সৈন্যদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও দেওয়া হবে৷ তবে ইউক্রেনের বাইরেই সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী কোম্পানি কেএনডিএস ইউক্রেনের ভূখণ্ডেই অস্ত্র উৎপাদন করতে কারখানা খুলতে চায় বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে৷ শুক্রবার জেলেনস্কি প্যারিসের উপকণ্ঠে সেই কোম্পানি পরিদর্শন করছেন৷