হামাসকে নির্মূল করা সম্ভব নয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর স্বীকারোক্তি
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র বলেছেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে কোনোভাবেই নির্মূল করা সম্ভব নয়। এই মন্তব্যের জের ধরে ইসরায়েলি সরকারের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে আর তা ঢাকতে খুব দ্রুতই তারা হামাসকে ধ্বংস করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছে। খবর এএফপির।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজীরবিহীন হামলার মাধ্যমে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল আজ আট মাস ধরে চলছে। এই সময়ে হামাসকে গাজার বাইরে বের করে দেওয়ার সব তৎপরতাই ভেস্তে গেছে। যদিও ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে গোটা উপত্যকা।
গতকাল বুধবার (১৯ জুন) ইসরায়েলের চ্যানেল থারটিনে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার বিষয়টি হবে মানুষের চোখে বালু ছুড়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। আমরা যদি কোনো বিকল্প উপায় না রাখি, তবে দিন শেষে হামাস থেকেই যাবে।’
ড্যানিয়েল হাগারি আরও বলেন, ‘হামাস একটি আদর্শের নাম এবং আমরা কোনো আদর্শকে নির্মূল করতে পারব না।’
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং বলা হয় হামাসকে পরাজিত না করা পর্যন্ত গাজায় আক্রমণ থামানো হবে না।
এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অফিস বলেছে, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার অন্যতম লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক ও সরকার চালানোর সক্ষমতাকে ধ্বংস করা। আর এক্ষেত্রে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বিভাগ সেই নির্দেশনা মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে, টেলিগ্রাম চ্যানেলে আলাদা এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী হাগারির মন্তব্য সম্পর্কে বলে যে, হামাসের মতাদর্শ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত পরিষ্কার ও স্পষ্ট এবং এ সম্পর্কে অন্য যে কোনো বিবৃতিতে যা দাবি করা হবে তা প্রসঙ্গের বাইরে থাকবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৯৪ জনকে হত্যা করে। এ সময় আরও ২৫১ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। এদের মধ্যে ১১৬ জন এখনও তাদের হাতে বন্দি রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে জিম্মিদের মধ্যে ৪১ জন মারা গেছে।
হামাসের ওই হামলার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সংগঠনটিকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে গাজা উপত্যকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৩৭ হাজার ৩৯৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।