ঐতিহাসিক নির্বাচনে ভোট দিতে তৈরি ফ্রান্সের জনগণ
মাঝে-মধ্যেই সহিংস হয়ে ওঠা ফ্রান্সের দ্রুতলয়ের নির্বাচনি প্রচারণা শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের ‘কঠোর আবেদন’ শেষে আগামীকাল রোববারের (৭ জুলাই) গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিতে তৈরি হচ্ছেন ফ্রান্সের ভোটাররা।
প্রথম ধাপের নির্বাচনে ডানপন্থিদের উত্থানের কারণে সাধারণ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণের আগে গত শুক্রবার মধ্যপন্থি প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আত্তাল বলেছেন, ডানপন্থিদের উত্থান কেবল ঘৃনা আর সংঘাতই বয়ে আনবে।
তবে ডানপন্থি হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) পার্টির নেতা জর্ডান বারডেলা তার প্রতিপক্ষের এসব অভিযোগকে অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ হিসেবে বর্ণনা করে ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রদানের আবেদন জানিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রথম দফা পার্লামেন্ট নির্বাচনে দেশটির প্রতি তিনজন ভোটারের একজন ন্যাশনাল র্যালির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল।
এখন ভোটারদের সামনে পছন্দের বিষয় হলো আধুনিক সময়ে ফ্রান্সের প্রথম অতি-ডানপন্থি সরকার গঠন অথবা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। ভোটাররা ভাবছেন যেই নির্বাচনে জয়ী হোক না কেন সামনে অপেক্ষা করছে অশান্তি। আর পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে ৩০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে সরকারকে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডামানিন জানান, ৫১ জন প্রার্থী অথবা তাদের ডেপুটি বা পার্টির কর্মী শারীরিক হামলার শিকার হয়েছেন। একটি ঘটনায় চরমপন্থি একটি দল ‘নির্মূল করার’ জন্য ১০০ জন আইনজীবীর একটি তালিকাও প্রকাশ করে। তারা ন্যাশনাল র্যালির প্রতি খোলা চিঠিও প্রকাশ করে।
প্রায় এক মাস আগে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, যা ফরাসীরা একটি ধাক্কা হিসেবেই নিয়েছিল কেননা এর পেছনের কারণ ছিল অজানা। তবে যখন থেকে ভোটাররা নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে শুরু করে উত্তেজনা আরও স্পষ্ট হয়।
প্রথম দফা নির্বাচনের পর বেশ কিছু নির্বাচনি পর্যালোচনায় দেখা গেছে জাতীয় পরিষদে ন্যাশনাল র্যালি পার্টির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চূড়ান্ত প্রচারণা শেষে বলা যাচ্ছে না কারো একার দখলে যাবে দেশটির আইনসভা। এমনকি ন্যাশনাল র্যালির প্রধান মেরিনা লে পেনও মনে করেন তার দলের ২৮৯টি আসনে জয়ের সুযোগ রয়েছে। তবে নির্বাচনি বিশ্লেষকরা এই সংখ্যা ২০০ বা তার কিছু বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন। দেশটির ৫৭৭টি আসনের জাতীয় পরিষদে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ২৮৯টি আসন। প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল নিউ পপুলার ফ্রন্ট আর তৃতীয় অবস্থান অধিকার করেছিল প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর জোট।