ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, শিক্ষা বিভাগ অপ্রয়োজনীয় এবং এটি শিক্ষার মানোন্নয়নের পরিবর্তে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি করছে। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে এক অনুষ্ঠানে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব, এটি বন্ধ করে দেব। এটি আমাদের কোনো উপকার করছে না।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় শিক্ষা খাতে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করে, তবুও সাফল্যের দিক থেকে শিক্ষার্থীরা তালিকার একদম নিচের দিকে রয়েছে।’
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আইনি সীমার মধ্যে থেকে শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন অংশ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত ফেডারেল কর্মসূচিগুলো বন্ধ হলে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হলে তা আরও কার্যকর হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের শিক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লিন্ডা ম্যাকমাহন। তিনি এক সময় ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের (ডব্লিউডব্লিউই) সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও পরিচিত। ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতির সঙ্গে একমত হয়ে তিনি শিক্ষা বিভাগে সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তার মতে, শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ফেডারেল সরকারের পরিবর্তে রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের হাতে গেলে শিক্ষার গুণগত মান আরও উন্নত হবে।
অনুষ্ঠানে ট্রাম্প লিন্ডা ম্যাকমাহনের প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, তিনি হবেন শেষ শিক্ষা সচিব। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তার (লিন্ডা ম্যাকমাহন) জন্য প্রশাসনে অন্য কিছু খুঁজে বের করব।’
এদিকে শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যা হওয়ার সম্ভাবনা কম। সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও বিল পাস করাতে ৬০ ভোটের প্রয়োজন, যা অর্জন করা কঠিন হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি মূলত শিক্ষার্থীদের ঋণ প্রদানসহ নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করে। বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার ৪০০ কর্মী নিয়ে এই বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি প্রশাসনিক ব্যয় কমানোর জন্য একটি ভালো পদক্ষেপ, আবার কেউ মনে করছেন, এটি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকি।