রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
ওপরের দিকে তুলে ধরা একজোড়া স্যান্ডেল কাকে দেখাচ্ছে একটি রোহিঙ্গা শিশু? মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনীকে? নাকি পরাশক্তিদের, যারা ব্যবসায়িক স্বার্থে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যাকে অন্ধভাবে সমর্থন করছে? নাকি গোটা পৃথিবীর সবাইকে, যারা নৃশংস গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দেখেও চুপ করে বসে আছে?
এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চার মিনিট ১৩ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্যচিত্র ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ নির্মাণ করেছেন জসিম আহমেদ।
এর আগে ইতালির নেপলসে 'মানবাধিকার চলচ্চিত্র উৎসব' ঘুরে আসা প্রামাণ্যচিত্রটি এবার নির্বাচিত হলো তুরস্কের ছবি মেলায়। দেশটির আনকারায় হাক-ইস স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছে ছবিটি। তুরস্ক সরকারের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ আয়োজন শুরু হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর।
উৎসবের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২৪টি দেশ থেকে পাঁচ হাজার ৪০৪টি ছবি জমা পড়েছে। এর মধ্য থেকে নির্বাচিত হলো চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার ছবিগুলো। ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ সেগুলোরই একটি।
ছবির পরিচালক জসিম আহমেদ বলেছেন, “কোনো ধারাবর্ণনা ও সাক্ষাৎকার ছাড়াই সাজানো ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’-এ ইংরেজি, ইতালিয়ান, ফরাসি, স্প্যানিশ ও তুর্কি ভাষার ওপেন ক্যাপশন রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট ও তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরতে ছবিটি তৈরি করেছি।”
ইতালির নেপলসে ৬ থেকে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মানবাধিকার উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পায় ছবিটি।
‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ পুরোটাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে মোবাইল ফোনে ধারণ করেছেন নির্মাতা জসিম আহমেদ। একটি শরণার্থী দলের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াকে ঘিরে গল্প শুরু হয়। শেষে দেখা যাবে, শরণার্থীদের আরেকটি দল আসছে ক্যাম্পে। ছবিটির সংগীত পরিচালনা ও শব্দসজ্জা করেছেন রিপন নাথ। পাণ্ডুলিপি লিখেছেন ফরিদ আহমেদ।
জসিম আহমেদের আগের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘দাগ’ অংশ নিয়েছে ৭০তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের শর্টফিল্ম কর্নারে। এটি এখন যুক্তরাজ্যভিত্তিক শর্ট ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে আমেরিকার মূলধারার টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে। শিগগিরই ইউরোপের টেলিভিশনেও ১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ছবিটি প্রচারের কথা রয়েছে।