মেলা থেকে
বাংলা সাহিত্যের প্রচুর অনুবাদ প্রয়োজন : রফিকুল ইসলাম
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় রোববার দেখা হয় অধ্যাপক ডক্টর রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়ে বলেন, ‘এখন সময় এসেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে আন্তর্জাতিক বইমেলায় পরিণত করবার। শুধু বাংলাদেশের বইমেলা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এ ব্যাপারে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।’
মেলার আয়োজন নিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একুশ দফার এক দফার ভিত্তিতে বাংলা একাডেমি হয়েছে। ভাষা শহীদদের স্মৃতিসৌধ দুটো—একটি শহিদ মিনার, অন্যটি বাংলা একাডেমি। সুতরাং বাংলা একাডেমি একুশে বইমেলা আয়োজন করবে, এটা তো স্বাভাবিক। তবে আরেকটা দাবিও উঠেছে যে, বইমেলা প্রকাশকরা স্বাধীনভাবে আয়োজন করবে। সেটাও ভাববার বিষয়। দুই দিকেই যুক্তি আছে। দেখা যাক ভবিষ্যতে সেটি কোন দিকে যায়।’
গণমাধ্যমে বাংলা ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা প্রচার মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিবেশনা করে, তাদের অবশ্যই প্রমিত ভাষা ব্যবহার করা উচিত। দেশের সাধারণ মানুষ যাতে বুঝতে পারে সেই দিকে নজর দিতে হবে।’
মিশ্র ভাষায় কথা বলা প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হয় আমরা বাংলায় বলব , নয়তো ইংরেজিতে বলব, দুটোর মিশ্রণ করা যাবে না। খিচুড়ি ভাষায় কথা বলা অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ। এতে ভাষার প্রতি অমর্যাদা করা হয়।’
বাংলা ভাষার সাহিত্যকে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে কতটা পৌঁছে দিতে পেরেছি জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পারিনি, এজন্য প্রচুর অনুবাদ করতে হবে। সেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এখানে অনুবাদক সৃষ্টি হচ্ছে না। মেলায় প্রচুর বই বেরুচ্ছে ঠিক। কিন্তু তার মধ্যে কয়টি বা অনুবাদের বই? আর অনুবাদ না হলে কী করে বহির্বিশ্বে তা ছড়াবে? তাই বাংলা সাহিত্যের প্রচুর অনুবাদ প্রয়োজন।’
অনুবাদের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির ভূমিকা কী হতে পারে, জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা একাডেমির অনুবাদ বিভাগ তো একটা মরা বিভাগ। এটাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। ভালো অনুবাদক সৃষ্টির জন্য কাজ করতে হবে। তবেই তো বাংলা সাহিত্য অন্য ভাষার মানুষের কাছে পৌঁছাবে।’
এর আগে সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শহীদ রণদাপ্রসাদ সাহাকে নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রফিকুল ইসলাম। আলোচনায় আরো অংশ নেন আজিজুর রহমান আজিজ, রমণীমোহন দেবনাথ, হেনা সুলতানা, আর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রতিভা মুৎসুদ্দি।