ভিন্ন আঙ্গিকে আইনস্টাইনের জীবনী

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হলো কবি ও গল্পকার অঞ্জন আচার্যের এক ব্যতিক্রমী জীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমিই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন’। বইটি প্রকাশ করেছে উৎস প্রকাশন (প্যাভিলিয়ন-০৯, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)।
বইটির সারসংক্ষেপ এমন : বাবাকে ডেকে এনে স্কুলের শিক্ষক নিশ্চিত গ্যারান্টি দিয়েছিল— ‘আপনার অকর্মা ছেলেকে দিয়ে জীবনে কিচ্ছুটি হবে না। সব পণ্ডশ্রম!’ অথচ সেই ‘অকর্মা’ ছেলেটিই যে একদিন পাল্টে দেবে বিজ্ঞানের মানচিত্র, তা কে ভেবেছিল সেদিন? একটা সময় টিউশনি করে পেট চালাতে হয়েছিল তাকে। বহু কষ্টেসৃষ্টে জোগাড় করে সাধারণ এক প্যাটেন্ট অফিসের দ্বিতীয় শ্রেণির কাজ। সেই অফিসে চাকরিকালেই মানুষটি যখন নামিদামি এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগপত্র পায়, তখন অফিসটির পরিচালক শুনে ভেবেছিল, এ নেহাত ঠাট্টা বৈ কিছু নয়। কারণ, এত লোক থাকতে ওই মানুষকে কেন বিশ্ববিদ্যালয়টি অধ্যাপকের মতো পদ দিতে যাবে?
জীবনে চলার পথে এমনই কতশত অপমান সয়ে, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে তবুও একটু একটু করে এগিয়ে গেছে সে। আর হয়ে ওঠে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। বিশ্বে তুমুল জনপ্রিয় এই ব্যক্তিকে ঘিরে সাধারণ মানুষের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়ে সবসময়ই মুখে কুলুপ এঁটে থাকত। কাউকেই কিছু বলতে চাইত না। এমনকি জীবদ্দশায় দুবার তার জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয় দুই লেখক। সেখানেও যথেচ্ছ কলম চালায় সে নিজেই। কী ছিল সেই সব কথা, যা সে কাউকেই বলতে চায়নি? কেন সে তার সব দলিল রেখে যায় ব্যক্তিগত সহকারীর কাছে? শর্ত দিয়ে যায়, মৃত্যুর পর যেন সেগুলো দান করা হয় জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে, আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন সেগুলো গোপনে সংরক্ষণ করে। কেন এই আড়াল করা? কী এমন ঘটনা ছিল তাহলে জীবনে? সেই গোপন সিন্দুকে আলো ফেলা হয়, এক এক করে সব দলিল ঘেঁটে বের করা হয় অজানা এক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনকে। প্রচলিত মিথ বা কিংবদন্তিগুলো একপাশে সরিয়ে তুলে আনা হয়েছে ভালো-মন্দ মিলিয়ে এক রক্তমাংসের মানুষকে, এক বিজ্ঞানীকে।
বই সম্পর্কে জানতে চাইলে অঞ্জন আচার্য বলেন, ‘ভিন্ন এক আঙ্গিকে বইটি লেখা হয়েছে। বাংলাদেশের এক কিশোরের সঙ্গে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের কাল্পনিক কথোপকথন দিয়ে সাজানো হয়েছে এটি। আঙ্গিকের প্রয়োজনে এমনটা প্রয়োগ করা হলেও ব্যবহৃত সব তথ্যই বাস্তব সত্য। বইটিতে এমন অনেক তথ্যের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে, যা অনেকের কাছেই অজানা।’
১১২ পৃষ্ঠার এই বইটির মূল্য ২০০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন মুস্তাফিজ কারিগর।