দেখি ছোট ছবি
ছেলে সত্যজিতের চোখে বাবা সুকুমার
সুকুমার রায় জন্মেছিলেন ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর। আজ থেকে প্রায় ১২৮ বছর আগে। কিন্তু এখনো শৈশবে বাঙালিদের বাংলা পড়া শুরু হয় সুকুমার রায়ের ছড়া দিয়ে। সুকুমার রায়ের মতো শক্তিমান লেখনি বাংলা সাহিত্যে খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাংলা সাহিত্য, বিশেষ করে শিশু সাহিত্যে সুকুমার রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ছড়ার বই ‘আবোল তাবোল’, গল্পগ্রন্থ ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’। এ ছাড়া শিশুদের পত্রিকা ‘সন্দেশ’ সম্পাদনা করেন তিনি।
সুকুমার রায়ের বাবা ছিলেন শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী। আর সুকুমার রায়ের ছেলে চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। রায় পরিবারের ছেলে সত্যজিৎ ১৯৮৭ সালে বাবাকে নিয়ে নির্মাণ করেন একটি তথ্যচিত্র যার নাম ছিল ‘সুকুমার রায়’। সুকুমার রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে প্রায় ২৯ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই তথ্যচিত্র প্রযোজনা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বাবাকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রটির চিত্রনাট্য ও সঙ্গীত করেছিলেন সত্যজিৎ নিজেই। আর এতে নেপথ্য কণ্ঠ দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সিনেমাটোগ্রাফার ছিলেন বরুন রাহা, সম্পাদনা করেছিলেন দুলাল দত্ত। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছিলেন অশোক বোস। শব্দগ্রহণে ছিলেন সুজিত সরকার।
তথ্যচিত্রটিতে সুকুমার রায়ের জীবনী এবং তাঁর তৈরি চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়। এসব চরিত্রে পর্দায় উপস্থিত হন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, সন্তোষ দত্ত ও তপেন চ্যাটার্জি।
তথ্যচিত্রে সুকুমার রায়ের দুর্লভ কিছু ফটোগ্রাফ এবং তার হাতে আঁকা ছবি দেখানো হয়েছে। ইংল্যান্ডে প্রিন্টিং টেকনোলজি নিয়ে লেখাপড়া করেছিলেন সুকুমার রায়। কলকাতায় ফিরে এসে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। লেখালেখির পাশাপাশি তার আঁকার হাতও ছিল চমৎকার।
সত্যজিৎ রায়ের জন্ম ১৯২১ সালে। সেই বছরই কালাজ্বরে আক্রান্ত হন সুকুমার রায়। দুই বছর রোগে ভুগে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ১৯২৩ সালে মারা যান সুকুমার রায়। তখন সত্যজিতের বয়স মাত্র দুই। তাই বাবার স্মৃতি সত্যজিতের কাছে প্রায় নেই বললেই চলে। তথ্যচিত্রটির মাধ্যমেই যেন তিনি বাবাকে ফিরে পেতে চেয়েছিলেন।
‘সুকুমার রায়’ তথ্যচিত্রটি দেখুন