ইসলামপন্থা কিংবা জামায়াতে ইসলামীর সীমাবদ্ধতা
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত মাইদুল ইসলামের গবেষণাগ্রন্থ লিমিটস অব ইসলামিজম : জামায়াত-ই-ইসলামি ইন কনটেম্পরারি ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ (২০১৫) একাডেমিক পরিসরে ও পণ্ডিতসমাজে নিশ্চিতভাবেই বিশেষ আগ্রহের জন্ম দেবে। প্রথমত এ কারণে যে, নয়া উদারবাদের চাপ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে ইসলামপন্থা, বিশেষত যেটাকে মাইদুল ‘জামায়াতে ইসলামপন্থা’ আখ্যায়িত করেছেন, কোনো বিকল্প দর্শন হাজির করতে ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে কি না, নাকি ইসলামপন্থা অন্তর্গতভাবেই অসঙ্গতিতে ভরা তিনি সেই উত্তর খুঁজেছেন। এ কারণেও যে, ইসলামপন্থা নিয়ে গবেষণা ও আলোচনার বেশির ভাগটাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ভারত ও বাংলাদেশে ইসলামপন্থার মতাদর্শ ও চর্চা নিয়ে গুরুত্ববহ কোনো কাজই হয়নি। যদিও বিশ্বের মুসলমান জনগোষ্ঠীর ২০ ভাগ বাস করে এই দুটি দেশে। এসব বিবেচনায়, মাইদুল ইসলামের গবেষণাগ্রন্থটি বিশেষ অভাব পূরণ করেছে; এবং বলতেই হবে এ কাজের মাধ্যমে তিনি বৈশ্বিক পরিসরে ইসলামপন্থা নিয়ে গবেষণারত অগ্রসর চিন্তকদের মাঝে স্থান করে নিয়েছেন।
তবে বাংলাদেশে কেবল পণ্ডিতমহলে নয়, রাজনীতিসক্রিয় সর্বমহলেই আগ্রহ ও আলোচনা চোখে পড়ছে। এমন একসময়ে বইটি প্রকাশিত হয়েছে যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ নানা উছিলায় নানা রূপে হাজির হচ্ছে, জনপরিসর ভরে উঠেছে রাজনৈতিক পন্থা ও পদ্ধতির দ্বন্দ্বে। জামায়াতে ইসলামী নামের রাজনৈতিক দলটিও বর্তমানে সংকটময় রূপান্তরের কাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ আন্দোলনের বিরোধিতাকারী এবং মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী এই দলটি স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে কেবল পুনঃপ্রতিষ্ঠিতই হয়নি, তৃতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক দল হয়ে উঠেছে, অর্থনৈতিকভাবে প্রবল হয়েছে, এমনকি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতারও শরিক হয়েছে। আর ইদানীং যুদ্ধাপরাধের দায়ে গোলাম আযমসহ শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা দণ্ড পেয়েছেন, আরো অনেকের বিচার চলছে; রাজনৈতিক দল হিসেবেও সংগঠনটির বৈধ্তা আদালতে বিচারাধীন। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে এক টান টান উত্তেজনাকর সময়ে বইটি প্রকাশিত হয়েছে।
ফলত, মাইদুল কী বলতে চেয়েছেন তা নিয়ে অনেকেই জিজ্ঞাসু হয়ে আছেন। তিনি গ্রন্থের শুরুতেই ইসলামপন্থা ও এর উত্থানের ইতিহাস, নয়া উদারবাদ, জাতিরাষ্ট্র, রাজনৈতিক মতাদর্শ ইত্যাদি ধারণা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে নিয়েছেন। এও পরিষ্কার করে নিয়েছেন যে, বিশ্বাসের জগৎ ও রাজনীতির জগৎকে আলাদা করার সনাতন অভ্যাস থেকে অনেক গবেষকের মতো তিনিও সরে এসেছেন। এর আগে ধারণা করা হতো, মতাদর্শ সেকুলার ব্যাপারস্যাপার এবং সেহেতু ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রাইভেট পরিসরে ঠেলে দাও। মাইদুল বলছেন, মতাদর্শ নিয়ে সাম্প্রতিক ধ্যানধারণা অনুযায়ী একটা সর্বাত্মক ভুবনদৃষ্টির কারণে ইসলামপন্থাকে অবশ্যই আধুনিক রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে গণ্য করতে হবে। ব্যাপারটাকে তিনি এভাবে হাজির করেছেন, এরিস্টটল আমাদের শিখিয়েছেন, ‘মানুষ রাজনৈতিক প্রাণী’। এই বিবেচনাতেই মানুষের সমবায়ে গঠিত ধর্মীয় সম্প্রদায় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বস্তুত রাজনৈতিক।
কিন্তু ইসলামপন্থী কে? ইসলাম ধর্মের সকল মানুষই কি? ইসলামপন্থী বা ইসলামিস্ট বলে মাইদুল তাদেরকেই চিহ্নিত করেছেন যারা মনে করেন ইসলাম পৃথিবীর তাবৎ মানুষের জন্যই একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান এবং দাবি করেন যে এটি এমনই এক রাজনৈতিক মতাদর্শ যার উদ্দেশ্য শরীয়তভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম। অর্থাৎ ইসলামপন্থীদের কাছে ইসলাম কেবল ধর্ম নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শ। ইসলামপন্থীদের তিনটি ভাগে মাইদুল ভাগ করেন: মডারেট ইসলামিস্ট, মেইনস্ট্রিম ইসলামিস্ট, এবং এক্সট্রিমিস্ট ইসলামিস্ট। এ বিবেচনায়, জামায়াতে ইসলামীকে মডারেট ইসলামিস্ট দল হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, যেমন করা যায় মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডকে। মাহমুদ মামদানির সঙ্গে একমত হয়ে তিনি বলেন, ইসলামপন্থার জন্ম ঔপনিবেশিক আধুনিকতার অন্তরে এবং পশ্চিমের সাপেক্ষে। ইসলামপন্থাকে মুসলমান সমাজগুলোতে ইউরো-আমেরিকান আধুনিকতা চর্চার ফলশ্রুতিতে তৈরি অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখা যায়। পশ্চিমী আধুনিকতা ও পুঁজিবাদের বিকল্প হিসেবে ইসলামপন্থীরা ‘ইসলামী আধুনিকতা’ বা ‘ইসলামী রাষ্ট্র’র কথা বলে, অথচ সে আধুনিকতা বা রাষ্ট্রকল্প পশ্চিমের কাছে ধার করা ধারণা ছাড়া কিছুতেই সম্ভব হয়ে ওঠে না।
পাবলিক পরিসরে ধর্মের রাজনৈতিক উপস্থিতি নিয়ে মাইদুলের কোনো আপত্তি সেহেতু নেই। তিনি বরং রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে ইসলামপন্থা, বিশেষত জামায়াতে ইসলামপন্থার কড়িবর্গা মাপজোখ করে দেখেছেন। আর এই বিচারের জন্য তিনি উদারনৈতিকতার পথে ক্রমাগত হাঁটতে থাকা সাম্প্রতিক ভারত ও বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শ ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করেছেন। দেশে দেশে ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ কায়েমের ইউটোপিয়া নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনগুলোর অন্যতম তত্ত্বগুরু আবুল আলা মওদুদির নেতৃত্বে ১৯৪৭-পূর্ববতী ব্রিটিশ-ভারতীয় উপমহাদেশে গড়ে ওঠা এই রাজনৈতিক দলটি ত্রিখণ্ড- মহাভারতে নিজেও ত্রিধাবিভক্ত হয়েছে। মাইদুল দেখতে পাচ্ছেন, ভারত ও বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর চলন-বলন আলাদা, বলা চলে বিপরীতমুখী। ভারতে জামায়াতে ইসলামী নিম্নবর্গীয় চরিত্রের হলেও বাংলাদেশে তারা ক্ষমতাচক্রেরই অংশীদার, ভারতে নয়া উদারপন্থার বিরোধী হলেও বাংলাদেশে সহচর এমনকি বলা চলে নয়া উদারবাদের সুবিধাভোগী। ভারতে সেকুলার জাতীয়তাবাদী ও বামপন্থীরা জামায়াতে ইসলামীর মিত্রপক্ষ, অন্যদিকে বাংলাদেশে সেকুলার জাতীয়তাবাদী ও বামপন্থীরা তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। মাইদুল দাবি করেন, এসব বৈপরীত্য মূলত জামায়াতের মতাদর্শিক অসঙ্গতিরই প্রতিফলন।
ভারতে মুসলমানদের অবস্থান সমাজের সবচেয়ে নিচুতলায়, দলিত ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কাতারে। নয়া উদারবাদী পদক্ষেপগুলোর কারণে মুসলমানদের অবস্থা আরো তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। ফলে, জামায়াত বামপন্থী ও দলিত বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে একই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে নয়া উদারবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। কেবল মুসলমান নয়, দলিত নিম্নবর্গীয় মানুষদেরও স্বার্থে। তাদের অবস্থান ক্ষমতাগোষ্ঠীর বিপক্ষে। এমনকি, জামায়াতের ২৫ হাজার বা তারও বেশি সদস্য ভিন্ন ধর্মের মানুষ। ফলে, জামায়াতের ‘ইসলামী উম্মাহ’ ধারণা, যেখানে অমুসলিমরা বাদ পড়ে যায় এবং ভারতের বঞ্চিত সকল জনগণের হয়ে তাদের রাজনীতি বৈপরীত্যময় অবস্থানে গিয়ে পৌঁছায়। আবার, সংখ্যালঘু ‘অপর’ হিসেবে মুসলমানদের বিশেষ স্বার্থ রক্ষা করতে জামায়াত ‘হিন্দুত্ববাদ’কেই প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে শনাক্ত করতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে তারা যে পাশ্চাত্যবিরোধী, সেই পাশ্চাত্য থেকে আসা সেকুলারপন্থাকেই নিজেদের পথ হিসেবে গ্রহণ করে নেয়, সেকুলার ও বামপন্থী দলগুলো তাদের মিত্র হয়ে ওঠে। এমনকি ইসলামপন্থী রাজনীতির প্রধান গন্তব্য ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ নামের কল্পরাজ্য তৈরির বাসনাও ত্যাগ করতে হয়।
অন্যদিকে, সংখ্যাগুরু মুসলমানের বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর কাছে ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ কায়েম করা এক প্রবল মতাদর্শিক প্রবচন। অন্যান্য ইসলামপন্থী দলের মতোই জামায়াত বাংলাদেশে শরীয়তভিত্তিক একটি ‘ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা’ কায়েম করতে চায়। অনুসারীদের কাছে পুঁজিবাদের বিপরীতে এই স্বপ্ন বিলি করে। অথচ, পুঁজিবাদের এই পর্যায়ের নয়া উদারবাদী প্রকল্পকেই তারা বাংলাদেশে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আর এ কারণেই নয়া উদারপন্থা সমর্থক প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সীমা ছাড়িয়ে তারা এগুতে পারে না, কোনো বিকল্প রাজনৈতিক পন্থাও জনগণের সামনে হাজির করতে পারে না। নির্বাচনে তাদের জনসমর্থন ৩-১০ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খায়। বাংলাদেশে জনস্বার্থ পরিপন্থী নয়া উদারবাদী পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে জামায়াত সোচ্চার হয় না, বরং সুবিধা ভোগ করে। কিন্তু নয়া উদারবাদ উপজাত সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশ যেমন নাস্তিকতা, যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে মাঠ গরম করে রাখে, নীতিপুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। মাইদুল এসব বৈপরীত্যকেও তুলে ধরে দাবি করেছেন, এর উৎস নিহিত আছে মূলত দলটির মতাদর্শিক অসঙ্গতির মধ্যে।
সর্বোপরি, জামায়াতে ইসলামী এবং এ রকম ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো দাবি করে যে, সকল ‘মনুষ্য-তৈরি মতাদর্শ’ এবং ‘ধর্ম’ ব্যর্থ হবে; কারণ সেগুলো মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলোর (অসাম্য ও অবিচার) কোনো সমাধান দিতে পারে না, কিন্তু ‘মুক্তিদায়ী মতাদর্শ’ হিসেবে ইসলাম সব সমাধান দিতে পারে। মওদুদি বলতেন, ইসলামপন্থা সমাজতন্ত্রও নয়, পুঁজিবাদও নয় বরং মধ্যপন্থা। কিন্তু মাইদুল দেখতে পান, ‘মধ্যপন্থা’ বলে তিনি এবং অন্যান্য তাত্ত্বিকরা যে ইসলামী রাষ্ট্রকল্প খাড়া করেছেন তা বস্তুত পুঁজিবাদেরই অধীন, যাকে বড়জোর ‘কল্যাণমূলক নিয়ন্ত্রিত পুঁজিবাদ’ আখ্যা দেওয়া চলে। মার্কেট হবে নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু কিছুতেই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধ নয়। ব্যক্তিমালিকানা ও মজুরি শ্রম সমানভাবেই সচল থাকবে। সুদের বিরুদ্ধে কথা বললেও লভ্যাংশ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই জামায়াতের। কিন্তু মার্কস আমাদের দেখিয়ে গেছেন, সুদ ও লভ্যাংশ দুইই উদ্বৃত্ত তৈরি করে- যা পুঁজিবাদের প্রাণভোমরা। উপরস্তু নিরঙ্কুশ আধিপত্যবাদী সেই রাষ্ট্রে নারী, বিধর্মী এবং অন্যান্য অপরদের অবস্থান আবশ্যিকভাবেই দ্বিতীয় কাতারে। এও এক গুরুতর অসঙ্গতি বটে।
জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শগত সীমাবদ্ধতা, বাংলাদেশ ও ভারতে দলটির রাজনৈতিক শত্রু ও মিত্রপক্ষ নির্ধারণের বৈপরীত্য, এবং বিশেষত ভারতে নয়া উদারবাদের বিরোধিতা অথচ বাংলাদেশে সহচরী ভূমিকা মাইদুল যথার্থই শনাক্ত করতে পেরেছেন। তবে, জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শ ও কর্মকাণ্ড বিচার করেই বিশ্বব্যাপী বৈচিত্র্যময় ইসলামপন্থী রাজনীতির সীমানা দেগে দেওয়া যায় কি? বইটির শিরোনামের প্রথম অংশে সে রকম প্রস্তাবনা থাকলেও আমরা উত্তর পাই কেবল জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে। তা ছাড়া, সীমানাভাঙা বর্তমানে কেবল ইসলামপন্থা না, সংকটে আছে সর্বজনমান্যতা দাবিকারী সকল মতাদর্শই, এমনকি ‘রাজনীতি’ বলে এতকাল আমরা যে ধারণাটি চিনতাম তাও। মাইদুল ইসলাম বারবার ‘প্রগতিশীল’ রাজনীতির কথা বলেছেন, যা বইটির শেষভাগে স্পষ্ট হয়: পশ্চিমের বিপরীতে প্রতিবাদী মতাদর্শ হিসেবে ইসলামপন্থাকে অনেকেই উদযাপন করেন। কিন্তু এই বিপরীত ক্যাম্পের কোনো একটিতে আস্থা রাখার বদলে বরং আমাদের উচিত এমন এক সমালোচনাত্মক বুদ্ধিবৃত্তিক ডিসকোর্স গড়ে তোলা, যা একই সাথে প্রাচ্যবাদ, নয়া উদারবাদ এবং সর্বোপরি ইসলামপন্থার আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। কারণ, মুক্তিদায়ী আদর্শের কথা বললেও ইসলামপন্থা এমন এক রাজনৈতিক প্রকল্প খাড়া করে, যা বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় চলমান শোষণ-পীড়নকেই ভিন্ন নামে সচল রাখতে চায়।
কিন্তু সেই সমালোচনাত্মক ডিসকোর্স গড়ে ওঠার জন্য বোধহয় আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের শাহবাগ আন্দোলন, ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলন কিংবা আরব বসন্ত বিচার করলে আমরা বলতে পারি, পুরাতন সকল রাজনৈতিক মতাদর্শই ‘এম্পটি সিগনিফায়ার’ হয়ে উঠেছে, যেমন অর্থহীন হয়ে উঠেছে খোদ গণতন্ত্র ধারণা। আমরা এমন একসময়ে এসে দাঁড়িয়েছি, যার রাজনৈতিক ভাষা এখনো অঙ্কুরোদগমের অপেক্ষায়।
লেখক : শিক্ষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। (পিএইচডি ফেলো, সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস, কলকাতা।)