উদীচীর গণসংগীত উৎসবের বর্ণিল পরিসমাপ্তি
গণসংগীতের সুর ও বাণী এবং এর আদর্শকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বর্ণিল পরিসমাপ্তি ঘটল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত ‘ষষ্ঠ সত্যেন সেন গণসংগীত উৎসব ও জাতীয় গণসংগীত প্রতিযোগিতা-২০১৫’-এর। ২৮ মার্চ উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সত্যেন সেনের জন্মদিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ছিল ২৮ মার্চ শনিবার। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় অনুষ্ঠানমালা। শুরুতেই ছিল আলোচনা সভা। উদীচীর সভাপতি কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে এ পর্বে অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথি শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, উদীচীর সহসভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। আলোচনা সভার পর জাতীয় গণসংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীদের হাতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী, এবারের উৎসবের উদ্বোধক বিশিষ্ট লোকসংগীতসাধক ও শিল্পী স্বপন কুমার হালদার এবং আমন্ত্রিত অতিথি ভারতের বিশিষ্ট গণসংগীতশিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার।
‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ- এই তিনটি একক এবং একটি দলীয়সহ মোট চারটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা। সারা দেশে জেলাপর্যায়ের প্রতিযোগিতা শেষে বিভাগীয় পর্যায়ে যারা প্রতিটি বিভাগের প্রথম তিনটি স্থানাধিকার করেছেন, তাঁরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায়। এবারের প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে ‘ক’ বিভাগে প্রথম হয়েছেন রুবাইয়াত ইউসুফ অর্ণি, দ্বিতীয় হয়েছেন মোহাম্মদ আবু তাহের এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন মোহাম্মদ আলীমুল মাহাদী।
‘খ’ বিভাগে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন অয়ন চৌধুরী, দ্বিতীয় নুসরাত জাহান রিতফা এবং তৃতীয় হয়েছেন রক্তিম রায়। ‘গ’ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন জুটন চন্দ্র মজুমদার, দ্বিতীয় রাসু সরকার ও তৃতীয় মনিষা ঘোষ। এ ছাড়া দলীয় অর্থাৎ ‘ঘ’ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে উদীচী যশোর জেলা সংসদ, দ্বিতীয় হয়েছে উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে উদীচী বগুড়া জেলা সংসদ। প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গণসংগীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকার সেলিম রেজা, বিশিষ্ট গণসংগীতশিল্পী ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম এবং বিশিষ্ট গণসংগীতশিল্পী সোহানা আহমেদ। এ ছাড়া বিচারকদের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সংগীতবিষয়ক সম্পাদক সুরাইয়া পারভীন।
বিজয়ীদের হাতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়ার পর শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের সংগীতানুষ্ঠান। এদিন সংগীত পরিবেশন করেন গণসংগীত প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ীরা।
এ ছাড়া ছিল দেশবরেণ্য গণসংগীতশিল্পী ও সংগঠনগুলোর পরিবেশনা। সবশেষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কালজয়ী গণসংগীত রচয়িতা, সুরকার ও শিল্পীদের গান নিয়ে রচিত গ্রন্থনা পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা।