শিল্পী রিগানের ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’
‘আমাদের বাস্তব জগতে দেখা ও ভাবনার যে জগৎ আছে এমনকি আমরা যা দেখছি তার বাইরেও, তার চেয়েও আরো অনেক গুণ বেশি মানুষ ভাবে এবং দেখতে চায়, আমার এই চিত্রকর্মগুলোতে সেটায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি’, নিজের চিত্রকর্ম নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তরুণ চিত্রশিল্পী পারভেজ হাসান রিগান।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ শিরোনামে ২০টি চিত্রকর্ম নিয়ে শুরু হয়েছে চিত্রশিল্পী রিগানের প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী।
গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক চিত্রশিল্পী অধ্যাপক আবুল বারাক আলভী ও অধ্যাপক জামাল আহমেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরীয় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইজ্জাত।
‘গভীরতম বেদনার মধুরতম প্রকাশই হলো শিল্প’- শিল্পী মুর্তজা বশীরের এই উক্তি তরুণ শিল্পী রিগানকে অনুপ্রাণিত করেছিল শিল্পচর্চার শুরুতেই। সেই পথ ধরে শিল্পী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএফএ পর্বে আত্মপ্রতিকৃতির ওপর ভিত্তি করে ‘ফ্রিডম অব সোল’ ও ‘দি ইল্যুসিভ হ্যাপিনেস’ নামের দুটি আত্মনিরীক্ষামূলক সিরিজে কাজ করেন। পরবর্তীকালে অবয়বনির্ভর নিরীক্ষাধর্মী সিরিজ করেন ‘এ্যাগোনি অব ইন্টেলেক্ট কনফ্লিক্ট’, যেখানে বর্তমান সময়ে যন্ত্রের আধিপত্য ও আবেগের স্বল্পতার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ রকম বেশ কিছু সিরিজের কাজ করেছেন তিনি।
শিল্পীর সর্বশেষ নিরীক্ষামূলক সিরিজ হলো ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ যা আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শিত চিত্রকর্মগুলোতে মহাজাগতিক ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে মানবজাতির অবস্থান ও সম্পর্কের অন্বেষণকে তুলে ধরার যে প্রচেষ্টা, তাই হয়তো দেখতে পাবেন দর্শক।
শিল্পী পারভেজ হাসান রিগানের জন্ম ১৯৮৮ সালে বরিশাল জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগ থেকে বিএফএ ও এমএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১০ ও ২০১১ সালে চারুকলা অনুষদ আয়োজিত বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে যথাক্রমে ‘বেস্ট ড্রইং’ ও ‘মাধ্যম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার’ অর্জন করেন। এ ছাড়া ২০১২ সালে জাপানে গ্লোরিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত চিত্রপ্রদর্শনীতে ‘গ্র্যান্ড প্রাইজ’ অর্জন করেন।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্যালারি খোলা থাকে। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।