কায়ায় মুখ ও মুখোশ
মুখ ও মুখোশ, মানুষের বহুল চর্চিত দুটি শব্দ। অনেকে মুখোশের আড়ালে মুখ লুকায় আর কারো মুখোশের প্রয়োজন পড়ে না। মুখই হয়ে দাঁড়ায় মনের আয়না। ‘যখন বাস্তবধর্মী মুখাবয়ব বানাতে যাই, তখন মাঝে মাঝে মনে হয় এটা মুখোশ। আবার মুখোশ বানাতে গেলে মনে হয় এটাই মুখ।’ এভাবেই মুখ ও মুখোশ নিয়ে কথা বলছিলেন শিল্পী কনক কুমার পাঠক।
গ্যালারি কায়ায় ‘মুখ ও মুখোশ-৬’ শিরোনামে ১৫ জন শিল্পীর ১২১টি মুখোশ নিয়ে শুরু হয়েছে মুখোশ প্রদর্শনী। কাঠ, পেপার ম্যাশ, পেপার অ্যান্ড পিগমেন্ট, মেটাল, গ্লাস, ফাইবার গ্লাস ও মিক্স মিডিয়ায় তৈরি নানা রং, ভঙ্গিমা এবং নিরীক্ষাধর্মী মুখোশ রয়েছে প্রদর্শনীতে।
গত ৯ মে বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিশিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘আমরা যারা এখানে এসেছি তাদের চেহারাগুলো যেন মুখোশ। বরং দেয়ালে যেসব ঝুলছে সেগুলোই যেন মুখ।’ এর সাথে তিনি যুক্ত করলেন, রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই মুখোশের ছড়াছড়ি দেখছি।
শিল্পী মাহমুদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পধারায় দুটি দিক যুক্ত হয়েছে। একটি আমাদের ফোক, অপরটি বিদেশি ধারা। আমরাও নাগরিক হিসেবে বৈশ্বিক হয়ে উঠছি। ফলে ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকা, ডেনমার্ক, জার্মানের ধারা আমাদের শিল্পীদের মাঝেও উঠে আসছে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি ও সাহিত্যিক আনিসুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্যালারি কায়ার পরিচালক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী। গৌতম চক্রবর্তী জানান, “২০০৫ সালে আমরা ‘মুখ ও মুখোশ’ প্রদর্শনীর আয়োজন শুরু করি। এবার ষষ্ঠতম আয়োজন। আমাদের যে শিল্পীরা ভাস্কর্য গড়ে, ছবি আঁকে, তাদের হাতে মুখোশ কেমন হয় সেটা দেখলাম। দেখলাম যে ভালোই হচ্ছে। শিল্পরসিকরা পছন্দও করছেন সেসব কাজ।”
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া শিল্পীরা হলেন কাজী রকিব, মাসুদা কাজী, সাইদুল হক জুইস, শাবিন শাহরিয়ার, দেবাশীষ পাল, রেজাউল ইসলাম লাভলু, বিশ্বজিত পাল, শ্যামল সরকার, আবদুর রহিম, পিন্টু চন্দ্র দেব, দেবাশীষ মালাকার, সন্দীপ কুমার দেবনাথ, কনক কুমার পাঠক, অমিত কুচ ও ঋতুপর্ণ ধর।
প্রদর্শনী চলবে ২০ মে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।