একুশে পদক ২০২৩ বিজয়ী কনক চাঁপাকে গ্যালারি কসমসের সংবর্ধনা
২০২৩ সালের একুশে পদক বিজয়ী ও বিশিষ্ট শিল্পী কনক চাঁপা চাকমাকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে বাংলাদেশের শিল্প ও শিল্পীদের সমর্থনকারী প্ল্যাটফর্ম গ্যালারি কসমস।
ঢাকার বারিধারার গার্ডেন গ্যালারিতে গ্যালারি কসমস আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গ্যালারি কসমসের পরিচালক তেহমিনা এনায়েতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পপতি ও শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক অঞ্জন চৌধুরী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী-শিক্ষাবিদ জামাল উদ্দিন আহমেদ, কসমস ফাউন্ডেশনের পরিচালক দিলশাদ রহমানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
রাঙ্গামাটির দুর্গম পার্বত্য এলাকা তবলছড়িতে জন্ম নেওয়া কনক চাঁপা ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মাস্টার্স অব ফাইন আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি মিড-আমেরিকা আর্টস অ্যালায়েন্স ফেলোশিপ লাভ করেন।
ডিগ্রী শেষ করে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তার শৈল্পিক যাত্রা অব্যাহত রাখেন এবং দেশের সমসাময়িক শিল্পপটের অন্যতম সফল শিল্পী হয়ে ওঠেন।
অনুষ্ঠানে গ্যালারি কসমসের পরিচালক তেহমিনা এনায়েত বলেন, ‘শিল্প আমাদের আবেগ, চিন্তাভাবনা, অনুপ্রেরণা ও আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ। শিল্পের এই দর্শনগুলো কনক চাঁপা চাকমার কাজের মাধ্যমে আরও জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে ওঠে, যিনি আমার বোনের মতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কনক চাঁপাকে আজ বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পী হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার শিল্প বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছে। তার অনেক চিত্রকর্ম চাকমা সম্প্রদায়ের প্রাণবন্ত জীবনকে প্রতিফলিত করে।’
তেহমিনা বলেন, ‘আধা-বাস্তববাদী এবং বিমূর্ত শৈল্পিক শৈলীর সংমিশ্রণে, কনক তার সম্প্রদায়ের জীবনকে চিত্রিত করেছেন, বিশেষত নারীদের; এবং অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কার জয়ের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন- একজন শিল্পী এখনো একই সময়ে সামাজিকভাবে সচেতন ও ব্যাপকভাবে সফল হতে পারেন।’
অধ্যাপক জামাল উদ্দিন আহমেদ ও অঞ্জন চৌধুরী শিল্পকলায় কনক চাঁপাকে তার প্রতিভা ও একুশে পদকসহ বিভিন্ন কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানান।
অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘শুরু থেকেই কনক আমার কাছে বোনের মতো। অনেক প্রশংসা আছে কিন্তু এই জাতীয় সম্মানের সঙ্গে কোনো কিছুই তুলনীয় নয় এবং তিনি তার নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এটি অর্জন করেছেন। শুধু তার নিজ জেলা রাঙ্গামাটিতেই নয়, আমি যেখানেই যাই না কেন- খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম কিংবা দেশের বাইরেও, সবাই কনককে চেনে তার কাজের জন্য এবং তিনি আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কনক চাঁপা গ্যালারি কসমসকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি গ্যালারি কসমস ও কসমস ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে আমার প্রিয় তনু আপা (তেহমিনা এনায়েত) এবং এনায়েতউল্লাহ খানকে এই সুন্দর সন্ধ্যায় এই সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য।
অনুষ্ঠানে কনক চাঁপা চাকমা বলেন, ‘আমি পাহাড় থেকে সমভূমিতে এসেছি। আমি ভেবেছিলাম এই যাত্রা অসম্ভব হবে এবং আমি আপনাদের ভালবাসা, সমর্থন এবং অনুপ্রেরণা ছাড়া সম্মান ও সাফল্য অর্জন করতে পারতাম না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একুশে পদকে ভূষিত হতে পেরে আমি অবিশ্বাস্যভাবে গর্বিত ও কৃতজ্ঞ বোধ করছি এবং আমি আমার পথচলায় আপনাদের অব্যাহত সমর্থন ও ভালোবাসা চাই।’