আখের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল জয়পুরহাট চিনিকল
গত মৌসুমের ৬৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং আগের ৬শ’ ১৭ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর দেশের বৃহত্তম চিনিকল ‘জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেড’ এর চলতি ২০২২-২৩ ইং মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আখ সরবরাহ না পাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল চিনিকলটি। ফলে ব্যাহত হয়েছে চিনি উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা। তাই এবারও জয়পুরহাট সুগার মিলস্কে বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে।
চলতি মৌসুমে জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডে ৩০ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১ হাজার ৮শ' ৬৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এবার আখ থেকে চিনি আহরণের হার (রিকোভারি) ধরা হয়েছিল ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। আখ মাড়াইয়ের জন্য মোট ২৫ কর্মদিবস চিনিকলটি চালু রাখার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সেখানে এবার ১৯ কর্মদিবসে মোট ২৩ হাজার ১৬৯ দশমিক ১৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১২শ’ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬শ’ ৬৬ মেট্রিক টন কম। এবার আখ থেকে চিনি আহরণের হার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ১২ শতাংশ কম, মাত্র ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ পাওয়া গেছে। ফলে সঙ্গত কারণে এবারও লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে বৃহৎ এ চিনিকলটিকে।
জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখলাছুর রহমান জানান, জয়পুরহাট চিনিকলের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার বাইরের অন্য চিনিকল (মিল) এলাকার আখ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাড়াইয়ের জন্য এ চিনিকলে ঠিকমত সরবরাহ না পাওয়ায় কার্যত আখ সংকটের কবলে পড়ে চিনিকলের আখ মাড়াই নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ হয়েছে।
আখের গুড়ের চেয়ে চিনির দাম কম হওয়ায় এবং আখের চেয়ে অন্যান্য ফসলের চাষ বেশি লাভজনক হওয়াসহ নানা কারণে ২০ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনোক্ষম জয়পুরহাট চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল। উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় আখের অভাবে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ক্রমাগত ব্যাহত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের এ বৃহৎ চিনি শিল্প ইউনিটটিকে প্রতি মৌসুমেই বিশাল অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে।