আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে খারিজের প্রতিবাদে ওই দলটির ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচি আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানী ধানমণ্ডিতে দলের সভাপতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া ভারতের সহিংসতার ঘটনা বাংলাদেশকেও উদ্বিগ্ন করে বলে জানান তিনি।
আজ শনিবার ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে উঠে আসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর প্রস্তুতি, দুর্নীতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান, ভারতের সহিংসতা এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়। সেই সঙ্গে ওবায়দুল কাদের কথা বলেন গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার ঘটনা এবং পরবর্তী সময়ে এর বিরুদ্ধে বিএনপির ডাকা কর্মসূচি প্রসঙ্গে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া জামিন না পেয়ে বিএনপি আদালতের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ করেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অভিযোগ করেছে এটা ঠিক আমি জানি না। বিষয়টি খুব দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে এই বিক্ষোভ কার বিরুদ্ধে? আদালতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিএনপি? বেগম জিয়ার জামিন চেয়েছে আদালতের কাছে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে। এমন অবস্থায় বিক্ষোভ করেছে আদালতের বিরুদ্ধে। এখানে সরকার আর আদালতকে গুলিয়ে ফেলতে চায় বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জামিন পেলে আদালত দিয়েছে, না পেলে সরকার প্রভাবিত করেছে। এ ধরনের বিষয়গুলো তারা বারবার বলে আসছে। আসলে বিএনপি আদালতের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ঢাকা শহরের নেতাকর্মীদের নিয়ে যে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে এই বিক্ষোভ আদালতের বিরুদ্ধে। তাদের বিক্ষোভ দিতে পারে কিন্তু এই বিক্ষোভ সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এ বিক্ষোভ আদালতের বিরুদ্ধে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের নামে বিভিন্ন দুর্নীতি অপকর্ম উল্লেখ করে পোস্টার ছাপিয়ে গণপরিবহনের পেছনে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেদিন থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে ঠিক সেদিন থেকেই সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ দুর্নীতিবাজরা নজরদারিতে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টার্গেট নিয়েছেন, সেই টার্গেট অ্যাচিভ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। যার কথাই বলেন, বা যেই হোক না কেন, এসব নাম অভিযানের আওতায় আছে এবং এরা নজরদারিতে আছে। দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তারা কেউই রেহাই পাবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, এসবের সঙ্গে যারাই জড়িত তারা নজরদারিতে আছে। এর পিছনে যারাই থাকুক তারা ধরা পড়বে। দাগী সন্ত্রাসী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, চিহ্নিত অপকর্মকারী, এদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান চলবে।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, সব সহযোগী সংগঠন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জমা দিয়েছে শুধু যুবলীগ বাদে। এখানে সহযোগী সংগঠনের কোনো দোষ নেই। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য তাদেরকে টিম ওয়ার্ক করে বিভিন্ন জায়গায় কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল। যার কারণে তাদের হাতে কোনো সময় ছিল না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগে যার যার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জমা দিবে। যারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে এখনো নামের তালিকা জমা দেয়নি তারা খুব শিগগিরই দিয়ে দিবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পরেই যুবলীগের সিটি কনফারেন্স হবে এপ্রিল মাসে। এ ক্ষেত্রে শুধু যুবলীগ বাকি আছে। মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের সম্মেলন বাকি আছে। এপ্রিল মাসে হতে পারে। এ জন্য তাদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।