আম-লিচু বিনা ভাড়ায় রাজধানীতে এনে দিচ্ছে ডাক বিভাগ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/06/02/am.png)
বিনা ভাড়ায় রাজশাহীর আম ও লিচু ঢাকার পাইকারি বাজারে পৌঁছে দিচ্ছে ডাক অধিদপ্তর। রাজশাহী অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত আম পরিবহন কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে।
ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই সব মৌসুমি ফল রাজধানীর বিভিন্ন মেগাসপ ও পাইকারি বাজারে বিপণন করা হবে। বিক্রয়লব্ধ টাকা কোনো মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কৃষকের হাতে পৌঁছে যাবে। দেশব্যাপী ডাক পরিবহনে নিয়োজিত ঢাকা ফেরত গাড়ীগুলোতে বিনা মাশুলে প্রান্তিক কৃষকের পণ্য পরিবহনে সরকারের বাড়তি কোনো খরচেরও প্রয়োজন হবে না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঢাকার বেইলী রোডস্থ তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে রাজশাহী জেলার পটিয়া উপজেলা সম্মেলন কক্ষে এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি টেলিকনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাজশাহীর ডেপুটি কমিশনার মো. হামিদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এস ভদ্র রাজশাহীতে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে মধুপুর থেকে আনারস পরিবহনসহ চাহিদা ও গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই কার্যক্রম চালু করা হবে। করোনা সংকটকালে জনগণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সেবাসমূহ সহজতর করতে সরকার গত ৯ মে থেকে ‘কৃষকবন্ধু ডাক সেবা’ চালু করেছে। এ ছাড়া বিনা মাশুলে করোনা চিকিৎসা উপকরণ পিপিই ও কীট দেশব্যাপী সিভিল সার্জন কার্যালয়সমূহে পৌঁছানোসহ জনগণের দোরগোড়ায় নিরবচ্ছিন্ন ডাক সেবা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ ডাক সেবা চালু করা হয় বলে মন্ত্রী ভিডিও বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে তা পানির দামে বিক্রি করে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া তাদের অধিকার।
কৃষকদের জন্য আগামী বাজেটে প্রণোদনা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানসহ সরকার ঘোষিত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর। এসবেরই ধারাবাহিকতায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাওয়া নিশ্চিত করতে আমাদের এই উদ্যোগ। সরকারের এই উদ্যোগ প্রান্তিক কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অবদান রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য গৃহীত এই উদ্যোগ প্রান্তিক কৃষকের মুখে হাসি ফুটাবে, কৃষক উৎসাহিত হবে, উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এস ভদ্র বলেন, কৃষক স্বার্থ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের দিকনির্দেশনায় ডাক বিভাগ এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পেরে আনন্দিত। এই উদ্যোগ সফল করতে ডাক বিভাগ বদ্ধপরিকর।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2020/06/02/am1.jpg 687w)
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক বলেন, বিনা মাশুলে প্রান্তিক কৃষকের আম পরিবহনে সরকারের এই উদ্যোগ এই অঞ্চলের প্রান্তিক আম চাষীদের জন্য খুবই সহায়ক একটি কর্মসূচি।
গত ৩১ মে থেকে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে বিনা ভাড়ায় লিচু পরিবহন চালু করা হয়। করোনার বৈশ্বিক ক্রান্তিকালে প্রান্তিক কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর নির্দেশে গত ৯ মে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা থেকে ‘কৃষকবন্ধু‘ নামে এই কর্মসূচিটি চালু করা হয়।
অনুষ্ঠানে পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু, ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক অসিত কুমার শীল, রাজশাহীর পোস্টমাস্টার জেনারেল মোহাম্মদ শফিকুল আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহীর উপপরিচালক মো. শামসুল হক, পটিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়ালিউজ্জামান, রাজশাহীর ডিপিএমজি ওয়াহিদ-উজ-জামান, রাজশাহী জিপিওর সিনিয়র পোস্টমাস্টার মো. আমিনুর রহমান, পটিয়ার উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন্নাহার ভূইয়া, পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম এবং কৃষক প্রতিনিধি হিসেবে মো. নওশের উপস্থিত ছিলেন।