কক্সবাজারে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি না দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি না দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্যুর অপারেটস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারসহ ১০টি সংগঠন।
আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার শহরের লাবণি পয়েন্টের হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নাব্য সংকটের অজুহাত দেখিয়ে চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়নি। এতে করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল না করার ফলে কক্সবাজার তথা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ সেবা প্রদান করা পাঁচ লাখ মানুষের জীবিকা এখন হুমকির সম্মুখিন। অথচ প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে যত সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করে অধিকাংশ পর্যটকই সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। যেহেতু সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা মূল ভূখণ্ড থেকে ১৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত। সমুদ্রপথে যাতায়াত করা সহজসাধ্য নয় বিধায় প্রতিবছর নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুমে সমুদ্র শান্ত থাকায় পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে সেন্টমার্টিন নিয়ে নানা অপপ্রচার করা হচ্ছে। একশ্রেণির সুবিধাভোগী চক্র পরিবেশের কথা বলে পর্যটনশিল্পে বাধা সৃষ্টি করছে। অথচ ২০১৯ সালে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এক লাখ ৬০ হাজার ৫০০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করছেন। অর্থাৎ ১৫১ দিন পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ৬৩ জন মানুষ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে জাহাজ চলাচলের যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, ‘চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটন পরিবহণ জাহাজ বন্ধ আছে। কিন্তু মিয়ানমারের মালামাল পরিবহণ অব্যাহত আছে। যদি নব্যতার সংকট থাকত তাহলে মিয়ানমারের জাহাজ মালামাল নিয়ে কীভাবে আসে। বর্তমানে দুটি জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে অবস্থান করছে। যা গত তিন-চার দিন আগে সেন্টমার্টিন থেকে এই রুটেই ভাটার মধ্যেই দমদমিয়া জেটিতে এসেছে। নব্য সংকট থাকলে তা হতো না। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল না করার ফলে ট্যুর অপারেটরদের পাশাপাশি ট্যুর গাইড, হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ, রেস্টহাউজ, ফ্ল্যাট ও কটেজ ব্যবসায়ী-কর্মচারী, বাস-মিনিবাস ব্যবসায়ী-কর্মচারী, রেস্টুরেন্ট ও ফুড প্রসেসিং ব্যবসায়ী-কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ভ্যান- রিকশা-টমটমচালক এবং বিভিন্ন প্রকারের কুটির শিল্প ব্যবসায়ীসহ কক্সবাজার তথা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ সেবা প্রদান করা পাঁচ লাখ মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পরেছে। আমরা আমাদের জীবিকা ঠিক রাখার স্বার্থে এই নৌরুটে জাহাজ চলাচল চালু করার দাবি জানান।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, ‘ট্যুর অপারেটস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার সভাপতি আনোয়ার কামাল, সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিবুর রহমান টিটু, কলাতলীর মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান, কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম, জেলা হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম, এসএম আবু নোমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, সি-ক্রুজ অপারেটর্স অনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, কলাতলী মেরিন প্রাইড হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন বোট মালিক সমিতি ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, হোটেল-মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতি, কক্সবাজার বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপ, সেন্টমার্টিন রোস্তোরাঁ মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন বাজার মালিক সমিতি।