করোনায় আক্রান্ত আ.লীগের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লণ্ডভণ্ড গোটা বিশ্ব ব্যবস্থা। অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সবকিছুতে মারাত্মক আঘাত হেনেছে এ ভাইরাস। করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগে প্রাণ হারিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রী। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ও নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসাধীন প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা।
গত শনিবার হাসপাতালে মারা যান সাবেক স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তাঁকে গত ১ জুন নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হলে ফল পজিটিভ আসে। তবে মৃত্যুর আগে মোহাম্মদ নাসিমের পরপর তিনটি করোনা টেস্টের ফল নেগেটিভ এসেছিল। ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নাসিমের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে আসে কালো মেঘের ছায়া।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির আকাশে ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারালাম। ’
মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শনিবার রাত পৌনে ১২টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। পরে জানা যায়, তাঁর করোনা পরীক্ষা পজিটিভ এসেছে। তিনি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন ও দেখভালের দায়িত্বও ছিল তাঁর ওপর। বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছিলেন শেখ আবদুল্লাহ। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা দূর করে হাজিদের মন জয় করেছিলেন তিনি।
আজ সোমবার ভোররাত ৩টার দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তাঁর স্ত্রী সিলেট মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসমা কামরানও করোনায় আক্রান্ত নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও তাঁর স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ বানু।
এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজ এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হন। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এখন তাঁর অবস্থা আগের তুলনায় ভালো এবং তিনি সুস্থতার দিকে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।