করোনা জয় করলেন সুনামগঞ্জের নাট্যকর্মী সোহান
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে নানা মানবিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন থিয়েটার সুনামগঞ্জের নাট্যকর্মী ও স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’-এর সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি মো. সোহানুর রহমান সোহান। শুরু থেকেই থিয়েটার সুনামগঞ্জের মাধ্যমে বিভিন্ন সহায়তার কাজে অংশ নেন তিনি। রাতের বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেলে করে এবং কাঁধে করেও মানুষের বাড়িতে গিয়ে সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন সোহান। এ সময়ে রক্তদানও করেছেন তিনি। এরই এক পর্যায়ে করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করার পর রিপোর্টে পজিটিভ আসে।
সোহানের পরিবার ধারণা করছে, সম্প্রতি সুনামগঞ্জ শহরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোডে সত্তরোর্ধ অসুস্থ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। যদিও ওই সত্তরোর্ধ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। কিন্তু এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে সেবাদানের কাজ করতে গিয়ে সোহান করোনায় আক্রান্ত হন।
তবে করোনায় আক্রান্ত হলেও তাঁর মধ্যে কোনো ধরনের লক্ষণ ছিল না। তারপরও টানা ১২ দিন তাঁর মামা তফাজ্জুল হোসেনের বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন। এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয় দফায় তাঁর করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।
সোহান সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা সিদ্দিকুর রহমান এবং মা সেফালি আক্তার।
সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আমার মধ্যে কোনো লক্ষণ ছিল না। তারপরও আমার আশপাশের সবার কথা ভেবে আমি আইসোলেশনে ছিলাম। আমি আমার মামার বাড়িতে টানা ১২ দিন ছিলাম। আমার নানা, মামারা কেউ ভয় পাননি। বরং তাঁরা আমার সেবা যত্ন করেছেন।’
সোহান আরো বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করা দরকার। পাশাপাশি পরিবারের সবাই যতটা পারেন, করোনা রোগীকে সহযোগিতা করবেন এবং মনে সাহস দেবেন। আমরা মামা, নানা ও নানি একই বাসায় ছিলাম। আমি আলাদা ঘরে থেকেছি। যেহেতু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আল্লাহর রহমতে আবার সুস্থ হয়েছি, তাই এবার আরো বেশি মানুষের পাশে থাকতে চাই। কেউ আক্রান্ত হলে তাদের বাজার করা, ওষুধপত্র দিয়ে আসাসহ প্লাজমাও দিতে চাই। এবার মনে আরো সাহস পেয়েছি।’
সোহান বলেন, ‘আমি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর দেখলাম, আমাকে কতো মানুষ ভালোবাসেন। সবাই বারবার খোঁজ খবর নিয়েছে। এতো মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ, নাম বলে শেষ করতে পারব না।’