করোনা বিপর্যয়ে বিলম্বিত হতে পারে মাটির নিচে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন
চীনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মহামারী আকার ধারণ করায় পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নেওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে চীনা ঠিকাদার দল উহানে আটকা পড়েছে। তাই ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) নির্ধারিত সময়ে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নেওয়ার পরীক্ষামূলক প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
ডিপিডিসির সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটির কাজ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ডিপিডিসির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প নির্মাণ কাজের আদেশ পাওয়া চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদার তাবিয়ান ইলেক্ট্রিক অ্যাপারেটাস (টিবিইএ) কোম্পানি লিমিটেডের পুরো দলটি উহানে আটকা পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভিত্তিভূমি উহানে টিবিইএ কার্যালয় বন্ধ রয়েছে এবং তাদের অফিস কবে খুলবে তা এখন অনিশ্চিত।
তিনি বলেন, চীনা এ কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তা ঢাকায় আছেন। কোনো ধরনের সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য ডিপিডিসির কর্মকর্তারা তাঁদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগায়োগ রাখছেন।
বিষয়টি স্বীকার করে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান আশা করেন, করোনাভাইরাস সমস্যার সমাধান হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খুব শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারবেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে, রাজধানীতে বিতরণ ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে চীনের অর্থায়নে সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য টিবিইএর সাথে ডিপিডিসি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এ প্রকল্পের আওতায়, রাজধানীতে ৪০টি উপকেন্দ্র স্থাপন করবে। এ ছাড়া আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে হাতিরঝিল লেক ও ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লাইনগুলো মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিপিডিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে ধানমন্ডির সাত-মসজিদ রোড, মিরপুর রোড, সিটি কলেজ রোড এবং গ্রিন হেরাল্ড স্কুল এলাকার ১০৫ কিলোমিটারজুড়ে থাকা সব ধরনের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হবে এবং ওইসব এলাকায় কোনো তার দেখা যাবে না।
কর্মকর্তারা জানান, ধানমন্ডির পাইলট প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সকল উপাদান, যন্ত্রপাতি এবং সিস্টেম দেশে নিয়ে আসা হয়েছে এবং কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য সবকিছু তৈরি আছে।
তবে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে জানিয়ে ডিপিডিসির এ কর্মকর্তা বলেন, এখন মনে হচ্ছে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ আগামী বছর করতে হবে। কেননা, সরকার জনগণের দুর্ভোগ যাতে না হয়, সে জন্য এ ধরনের কাজ শীতকালে বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, এধরনের কাজে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা সিটি করপোরেশন এবং অন্যান্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টতা দরকার পড়ে।
বিকাশ দেওয়ান বলেন, প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি উপকেন্দ্রের ধারণক্ষমতাও বাড়ানো হবে।
তিনি আরো জানান, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়ে গেলে ১৩২ কেভি স্তরের ধারণক্ষমতার উপকেন্দ্রগুলো পাঁচ হাজার ৩৩০ এমভিএ এবং ৩৩ কেভির গুলো চার হাজার ৬৮০ এমভিএতে পৌঁছে যাবে।
চাইনিজ এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের কাজ করার জন্য চীনের এ ঠিকাদারকে বাছাই করে দিয়েছে ব্যাংকটি।