করোনা সংকটে প্রস্তাবিত বাজেট সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনার সংকটকালে বাস্তবমুখী, সময়োপযোগী, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব এবং সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের নিশ্চয়তা দিয়ে বাজেট পেশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির বাজেট সমালোচনা তাদের অন্ধবিদ্বেষপ্রসূত বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন ফর্ম বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ভালো কিছু দেখতে পায় না। বাজেট সমালোচনা তাদের অন্ধবিদ্বেষপ্রসূত কথামালার চাতুরি। করোনার সংকটকালীন বাস্তবমুখী, সময়োপযোগী, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব এবং সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের নিশ্চয়তা দিয়ে বাজেট পেশ করা হয়েছে।’
ঢাকা-১৪, সিলেট-৩ এবং কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থিতা বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এবার মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীর সংখ্যা অনেক। খুব একটা অসুবিধা নেই—এ কথা মনে করে অনেকেই আবার প্রার্থী হচ্ছেন। পায় আর না পায়—প্রার্থী হতে চায়। কারণ বিএনপি নেই শুনেছে। সেজন্য প্রার্থীতার দৌড়ও বেড়ে গেছে। নেত্রীর সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়নি। সাধারণ একটি গাইডলাইন তিনি দিয়েছেন। সেটা হলো ‘আমি ত্যাগী ও পরীক্ষিত কাউকে মনোনয়ন দেব। যাঁরা জনগণের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য এবং দুঃসময়ে ছিলেন।’ এমন একটি ধারণা তিনি আমাকে দিয়েছেন। এখানে গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকবে। দলীয়ভাবেও রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। নেত্রীরও নিজস্ব একটি টিম আছে। সেই টিম দিয়ে তিনি মাঠ পর্যায়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আশা করি আমরা যথাযথ ব্যক্তিকে মনোনয়নটা দিতে পারব।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেসব সাংগঠনিক শাখার সম্মেলন হয়েছে, নিয়মিত কমিটি রয়েছে সেগুলোতে সদস্য সংগ্রহ বই দেওয়া শুরু করব। কারণ করোনা কবে শেষ হবে কেউ জানে না। আমাদেরকে এর সঙ্গে বসবাস করতে হবে। এর মধ্যে বাঁচতে শিখতে হবে। আমাদের সংগঠনও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব। নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি আমরা আমাদের সভা-সমাবেশগুলো করতে থাকি। আমাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান ঢাকঢোল না পিটিয়ে, টিমগুলো ঘরে ঘরে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ করবে। এটা আমাদের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী। চিহ্নিত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, মাদাকাসক্ত—এ ধরনের লোক এবং যারা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, এদেরকে কোনোভাবে আওয়ামী লীগের সদস্য করা যাবে না। এটা আমরা বারবার বলেছি। আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘কাউকে খুশি করা বা দলভারী করার জন্য কেউ যদি বিতর্কিত লোকদের টেনে আনেন, তাহলে তাঁকেও কিন্তু শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রত্যেকটা টিমকে জবাবদিহি করতে হবে। যাঁদের সদস্য পদ দেবেন, তাদের পরিচয়, ব্যাকগ্রাউন্ড পুরোপুরি জানতে হবে। হঠাৎ করে জোয়ারের সঙ্গে এসে ক্ষমতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, আর কাজেকর্মে ভিন্ন। এই ধরনের লোকের দরকার নেই। কোনো অপরাধী ও অপকর্মকারীদের প্রশ্রয় দিবেন না। দলীয় পরিচয় শেখ হাসিনার কাছে অপরাধীর ঢাল হতে পারেনি। তা ছাড়া এখানে কেউ অযাচিত হস্তক্ষেপ করবেন না। ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। দুঃসময়েই তারাই পাশে থাকে। সুসময়ের কোকিলরা তখন সটকে পড়ে। তাই তাদের জন্য রাজনীতির পথ মসৃণ করতে হবে। তাদের কোণঠাসা করলে দল কোণঠাসা হয়ে পড়ে।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা সিটির অসংখ্য কমিটি দুজনের। অসংখ্য কর্মী কাজ করেন। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলে স্ত্রী ও মা-বাবা জিজ্ঞেস করলে পরিচয় বলতে পারে না। পরিচয়, তারা আওয়ামী লীগ করে। অথচ পদ পড়ে আছে, কিন্তু দেওয়ার কেউ নাই। যাঁরা এই পরিচয় দেওয়া থেকে বঞ্চিত করছেন, তাঁরা সংগঠনকে বঞ্চিত করছেন।
‘কর্মী না বলে, এখানে বলা যায় আওয়ামী লীগে নেতা কমে গেছে। কারণ পরিচয় নাই তো। এই ঢাকা মহানগর উত্তরে ১৩০০-১৫০০ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এখানে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে থাকলে হবে না। নেতা না হলে নেতৃত্ব দেবে কীভাবে? নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে কর্মীদের থেকে। ঢাকা শহর হলো পার্টির ইঞ্জিন। ইঞ্জিন যদি না চলে, বগি চলবে? একে সচল করতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের প্রাণ।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি।