কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় স্কুলশিক্ষক মুজিবুর রহমান ও তাঁর ভাই মিজানুর রহমান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির জামিন নিয়ে করা রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২০ জুন এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য  করেছেন আপিল বিভাগ।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।

আদালতে চার আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হেসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।   

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল এ মামলার বাদী জাহারুল ইসলামের ভাতিজা আশরাফুজ্জামান রতনের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আসামিরা হামলা করে ঘটনাস্থলে স্কুলশিক্ষক মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে। একইসঙ্গে তাঁর ভাই মিজানুর রহমানকেও জখম করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমানের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় নিহত স্কুলশিক্ষক মুজিবুর রহমানের ছেলে জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ ২০১৭ সালের ৯ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরে বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান। রায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কামরুল প্রামাণিক, সুমন প্রামাণিক ও নয়ন শেখ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন ফকিরাবাদ গ্রামের নজরুল শেখ, আব্দুর রহিম ওরফে লালিম শেখ, মাহফুজুর রহমান, হৃদয় আলী ও সম্রাট আলী প্রামাণিক এবং গোলাপনগর গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম ও আশরাফ মালিথা।

এ ছাড়াও মামলায় আরিফ মালিথা নামের এক আসামিকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

এর মধ্যে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ভেড়ামারার ফকিরাবাদ গ্রামের নজরুল শেখ ও আব্দুর রহিম ওরফে লালিম শেখ, গোলাপনগর গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম ও আশরাফ মালিথা আপিলের সঙ্গে জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এ চারজনকে জামিন দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে চেম্বার জজ আদালত তাদের জামিন আদেশ স্থগিত করে দেন। নিয়ম অনুসারে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠে। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলেন।

আপিল বিভাগের এ আদেশ পুর্নবিবেচনা চেয়ে চার আসামি আবেদন করে। সে আবেদনের শুনানি আজ শেষ হয়।