খালেদা জিয়ার জামিনের আপিল শুনানি আজ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে তার আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দেখবেন আদালত।
আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ৭ নম্বরে রাখা হয়েছে। এ আদেশকে কেন্দ্র করে আজ সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত শুনানি হবে।
এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবী ও দলের নেতাকর্মীরা আজকের আদেশের দিকে তাকিয়ে আছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন বক্তব্যে বিএনপি নেতারা এই ব্যাপারে তাঁদের আশাবাদের কথা বলেছেন; পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিন না হলে ‘এক দফা’ আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মামলার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আদালতের প্রতি আস্থা রাখছি। আমরা আশা করছি, আপিল বিভাগ জামিন দেবেন। সারা দেশের মানুষ চায়, মানবিক বিবেচনা করে হলেও অসুস্থ নারী খালেদা জিয়াকে যেন জামিন দেওয়া হয়।’
এ মামলার শুনানির সময় গত ২৮ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানতে তাঁর বিষয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ৫ ডিসেম্বর, অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল বোর্ডকে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই দিনই আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি মুলতবি রাখা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিনের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ সময় অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সগির হোসেন লিওন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মীর হেলাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মমতাজউদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ।
এর আগে গত ৩১ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন। এরপর গত ১৪ নভেম্বর সাতটি গ্রাউন্ডে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আপিল আবেদন করা হয়। ১৭ নভেম্বর আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ২৫ নভেম্বর শুনানির পর বিচারক সেটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো তিন আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ের পর ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেন খালেদা জিয়া।