গণমুখী রাজনীতিবিদ ছিলেন আবদুল মান্নান
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক শোকবার্তায় আবদুল মান্নানকে একজন ‘গণমুখী রাজনীতিবিদ’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
শোকবার্তায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মরহুম আবদুল মান্নানের রাজনীতির মূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন। বিলম্বে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করলেও ক্রমান্বয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বে পরিণত হন তিনি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি ছিলেন একজন জনঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনকল্যাণমূলক কাজেও তিনি যে অবদান রেখেছেন, সে জন্য এলাকাবাসী তাঁকে একজন আস্থাভাজন নেতা হিসেবে বরণ করেছিল। এ কারণেই বারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।’
শোকবার্তায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান দুঃসময়ে ভয় ও আশঙ্কার বিরাজমান পরিবেশে আবদুল মান্নান সাহেবের মতো একজন বলিষ্ঠ নেতার উপস্থিতি খুবই আবশ্যক ছিল। তাঁর ইহধাম ত্যাগ আমাদের মধ্যে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি করবে। আমি মরহুম আবদুল মান্নানের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।’
গতকাল সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান (৭৯) ইন্তেকাল করেন। অসুস্থ হয়ে গত রোববার থেকে তিনি রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং দুপুর ১২টায় ধানমণ্ডির ঈদগাহ মাঠে আবদুল মান্নানের দ্বিতীয় জানাজা হয়।
তারপর আবদুল মান্নানের মরদেহ তাঁর নিজের নির্বাচনী এলাকা ও গ্রামের বাড়ি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জে নেওয়া হয়। বিকেল ৩টায় নবাবগঞ্জ ডালিমপুর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাঁর তৃতীয় দফা জানাজা হবে। আর চতুর্থ জানাজা হবে বিকেল ৪টায় দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ মাঠে। এরপর আবদুল মান্নানকে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে দাফন করা হবে।
গত রোববারই আবদুল মান্নানের অসুস্থতার খবর শুনে লন্ডন থেকে একমাত্র মেয়ে মেহরাজ মান্নান ও তাঁর স্বামী ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম ঢাকায় এসেছেন। ব্যারিস্টার অসীমের বরাত দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গণমাধ্যম শাখার সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আবদুল মান্নান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-২ আসন থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ (ফেব্রুয়ারি), ১৯৯৬ (জুন) ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরপর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।