গম আমদানি ও গ্যাসকূপ খননের চুক্তি জনস্বার্থ পরিপন্থী : টিআইবি
রাশিয়া থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে গম আমদানির সিদ্ধান্ত এবং তিন গুণ বাড়তি ব্যয়ে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে ভোলায় তিনটি গ্যাসকূপ খননের চুক্তি জনস্বার্থ পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ রোববার টিআইবির পক্ষ থেকে সাংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি পর্যায়ে ক্রয় প্রক্রিয়ায় বেসরকারি তৃতীয় কোনো পক্ষের সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নেই, তথাপি গম আমদানিতে ‘ন্যাশনাল ইলেকট্রনিক বিডি’ নামক প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততার যে সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, তা বেআইনি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স আবিস্কৃত ভোলার গ্যাস ফিল্ডের কূপ খননের জন্য তিন গুণ বেশি ব্যয়ে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে একই প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা কাকতালীয় কোনো বিষয় নয়, বরং উভয় ক্ষেত্রেই একটি অসাধু স্বার্থান্বেষী ও সুযোগসন্ধানী চক্রকে সুপরিকল্পিতভাবে অনৈতিক ও অতিমুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ‘কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক খাদ্য ও জ্বালানির বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি করেছে, তা দেশের অর্থনীতিতে বহুমুখী সংকট তৈরি করেছে। এটি মোকাবিলায় সরকার আর্থিকখাতে নানাবিধ বিধি-নিষেধ আরোপের পাশাপাশি রাজস্ব ব্যয়ের ক্ষেত্রে যৌক্তিভাবে কৃচ্ছ্রসাধন নীতি গ্রহণ করেছে। সেই একইসময়ে বিদ্যমান আইন অমান্য করে আন্তর্জাতিক চলতি বাজার মূল্য থেকে অনেক বেশি দামে খাদ্যপণ্য আমাদানিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিতর্কিত প্রডিনটর্গকে কার্যাদেশ দেওয়ার ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি।’
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার কারণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের যখন নাভিশ্বাস উঠছে, তখন জ্বালানি নিরাপত্তার নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স আবিষ্কৃত ভোলার গ্যাস ফিল্ডে তিনটি নতুন কূপ খননের জন্য প্রতিটি কূপের ক্ষেত্রে বাপেক্সের ৮০ কোটির বিপরীতে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে ২৪০ কোটি টাকায় চুক্তি স্বাক্ষর সংশ্লিষ্ট মহলের ক্ষমতার অপব্যবহার বলে অভিযোগ তোলেন ড. জামান। তিনি বলেন, ‘সরকারি আর্থিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং বাপেক্সের সক্ষমতাকে উপেক্ষা করে কেন তিন গুণ বেশি মূল্যে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি করা হলো, তা জনস্বার্থে খতিয়ে দেখা জরুরি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যোগসাজশের দুর্নীতির এই যুগলবন্দির ফলে যারা প্রত্যক্ষ লাভবান এবং যারা এর পরোক্ষ সুবিধাভোগী, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’