গোপালগঞ্জে মঞ্চস্থ হলো ‘অভিশপ্ত আগস্ট’ নাটক

গোপালগঞ্জে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বর্বরোচিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ওপর রচিত ইতিহাস আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ নাটক ‘অভিশপ্ত আগস্ট’ মঞ্চস্থ হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে শহরের শেখ মণি অডিটোরিয়ামে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমানের পরিকল্পনা, গবেষণা ও তথ্য সংকলনে বাংলাদেশ পুলিশ নাট্যদল নাটকটি মঞ্চায়ন করে। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহিদুর রহমান।
১৫ আগস্টে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ড বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত ঘৃণ্যতম ঘটনা। ১৫ আগস্টের ভোরের সেই হত্যাকাণ্ডের করুণ আলেখ্য এবং পূর্বপর ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে ‘অভিশপ্ত আগস্ট’ নাটকে। ইতিহাসের খলনায়ক খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে ঘাতক চক্রের সদস্য মেজর ফারুক, মেজর রশীদ, ডালিমসহ পর্দার আড়ালে থাকা কুশীলবদের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। ষড়যন্ত্রের বীজ বপন, বঙ্গবন্ধু হত্যা, ক্ষমতা দখলের নীলনকশা তৈরি ও সেই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির গোপন পৃষ্ঠপোষকতা এখানে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে হত্যাকাণ্ডের পূর্ব পর্যন্ত ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের কর্মব্যস্ততার চিত্র। সেই বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের সময় নর-নারী ও শিশুর করুণ আত্মনাদে সেখানে বিভিষীকাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যেই বাড়িটি একটি বিভৎস মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। এ নির্মম দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে দর্শকরা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সেই কালরাতের ঘটনার আদ্যোপান্ত বাংলার জনতাকে জানান দিতেই আমাদের এ প্রয়াস।
নাটকের দর্শক শহরের শেখ হাসিনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ারা আক্তার বলেন, নাটকে ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ড, করুণ আর্তনাদ, ষড়যন্ত্রসহ সবদিক সুচারুভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি দর্শক হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। এ নাটক দেখে কেউই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
দর্শক রনজিত বিশ্বাস বলেন, নাটকটি দেখে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছি সেদিন বাঙালির মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ওপর নরকীয় হত্যাযজ্ঞের বাস্তব ঘটনা। নাটকের এ নির্মম দৃশ্য দেখে আমি কেঁদেছি। এ ঘটনা আমাদের কলঙ্কিত করেছে। আমাদের এই কলঙ্ক মোচন করতে হবে।