চিকিৎসকদের সঙ্গে মানবিক আচরণের আহ্বান পুলিশের
মহামারি করোনার বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সামনে থেকে যুদ্ধ করছেন নার্স ও চিকিৎসকরা। যুদ্ধের ময়দানে সামনে থাকলেও অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক বা বাজে আচরণ করছেন অনেকে বাড়ির মালিক বা স্থানীয় বাসিন্দারা। কোনো কোনো ভাড়াটিয়া নার্স ও চিকিৎসককে বাড়ি ছাড়তেও বলেছেন বাড়ির মালিকরা।
এমন অবস্থায় বাড়ির মালিকদের মানবিক ও সৌজন্যমূলক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
গতকাল বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সরকারি চিকিৎসক বলেন, ‘আমার দুইজন সহকর্মীকে তাঁদের বাসার মালিক বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এদের ভেতর একজন বাড়িওয়ালা খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি ছাড়ার কথা বলেছেন। আরেকজন আতঙ্কের কথা বুঝিয়ে বলেছেন। যদিও বাড়ির মালিকদের ভয় থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। পরিবেশটাই এমন। তাহলে চিকিৎসকরা কোথায় থাকবেন? এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। নতুবা এই চিকিৎসকরাই এক সময় মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। তাঁদেরও তো মানসিক শান্তির একটি ব্যাপার আছে।’
আজ শুক্রবার ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘চিকিৎসককে বাড়িতে না ঢুকতে দেওয়ার অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। এটা খুবই অমানবিক সিদ্ধান্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা যদি সেবা না দেন তাহলে কতটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে তা ভাবা মুশকিল। চিকিৎসক বা নার্সদের শুধু বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া নয়, তাঁদেরকে কোনোভাবেই ডিস্টার্ব করা যাবে না। এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো জাতি।’
কৃষ্ণপদ রায় আরো বলেন, ‘সেদিন একজন চিকিৎসককে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমরা গিয়ে ওই বাড়িতে তাঁকে ঢুকিয়ে দিয়ে এসেছি। একই সঙ্গে বাড়ির মালিককে সতর্ক করে এসেছি। শুধু মালিকরাই কিন্তু নয়, পাশের ফ্লাটের অনেকেই আপত্তি জানাচ্ছেন। এই মুহূর্তে সবার কাছ থেকেই আমরা মানবিক আচরণ আশা করি। একজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁকে কিন্তু বাড়িতে নয়, হাসপাতালেই রাখা হচ্ছে। সুতরাং বিষয়টি সবার ভাবা দরকার। এরপরও যদি কোনো বাড়ির মালিক চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকেন তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হওয়া ছাড়া হয়তো পথ থাকবে না। এক্ষেত্রে ডিএমপি সম্মানিত বাড়ির মালিক, ফ্ল্যাট মালিক বা বাসিন্দাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।’