চোরের খনি এখন ডাকাতের খনিতে রূপান্তরিত হয়েছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না সরকার।
এ ছাড়া রিজভী বলেন, “স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিজেই আক্ষেপ করে বলেছিলেন, তিনি পেয়েছেন ‘চোরের খনি’। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে সেই ‘চোরের খনি’ এখন ‘ডাকাতের খনি’তে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাই হলো আওয়ামী লীগ সরকারের সুমহান কীর্তি।” আজ শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে এক ভিডিও কনফারেন্সে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘অসংখ্য মানুষ এখন পানিবন্দি হলেও বন্যাকবলিত মানুষকে নিয়ে সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার সরকার। বন্যা উপদ্রুত মানুষের সাহায্যের জন্য সরকারের কোনো তৎপরতা নেই।’
রিজভী আরো বলেন, ‘দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট ও সুমানগঞ্জ জেলায় শত শত কিলোমিটার সড়ক বিপর্যস্ত হয়ে কয়েকশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁদপুর শহরেও এখন বিপজ্জনক অবস্থা।’
রিজভী আরো বলেন, ‘এ ছাড়া ভারতের গজলডোবায় সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় এবং বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও গাইবান্ধায় হু হু করে বন্যার পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উজানের পানিতে ফরিদপুরসহ দেশের মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
রিজভী বলেন, ‘এমনিতেই করোনার অভিঘাতে বিপর্যস্ত দেশ, তার ওপর ধেয়ে আসা বন্যার কবলে জনজীবন এখন চরম ভোগান্তির মধ্যে। অবিরাম বর্ষণে গরিব মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দুর্গত এলাকায় আওয়ামী জাহেলিয়াতের এই অন্ধকার সময়ে ক্ষমতাসীন দলের সরকার ও প্রশাসনের প্রশ্রয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার কিংবা আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহেদ চক্রের দৌরাত্ম্য শুধু নগদ অর্থ কেলেঙ্কারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এরা মানুষের জীবন নিয়েই ব্যবসা শুরু করে দিয়েছিল করোনা পরীক্ষার নকল সনদ দিয়ে। তাদের এ ব্যবসার বলি হচ্ছে জনগণ।’
রিজভী বলেন, ‘গত এক দশকের বেশি একটানা ক্ষমতায় থেকেও নিশিরাতের এই সরকারটির নিজেদের সাফল্যের কিছু নেই বলেই এখনো তাদের অতীতের কাসুন্দি ঘেটে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে হয়। একটানা একযুগের বেশি ক্ষমতায় থাকার পর একটি সরকারের জন্য বর্তমান ব্যর্থতা ও অধঃপতনের এমন করুণ পরিণতি যে কতটা লজ্জার, সে বোধ এই সরকারের আছে বলেও কেউ মনে করে না। সুতরাং, দেশে কারা ডাকাত, কারা ধোকাবাজ, কারা দুর্নীতিবাজ, কারা দুর্নীতিতে লিপ্ত, কোন সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজদের উত্থান হয়েছে; এটা দেশের মানুষ জানে।’