ছাত্রীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই নেওয়ার অভিযোগ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাকে বেঁধে রেখে মেয়ের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর মায়ের। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী এ বছর অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তের বাড়ি বরিশাল। কুমারখালী উপজেলার পান্টি এলাকায় তাঁর নানাবাড়ি।
ওই শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই ছেলে স্থানীয় ইন্টারনেট ব্যবসায়ীসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে তাঁর বাড়ি প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ডাসা ও দড়ি ছিল। তারা এসেই আমাকে বলে—তোর মেয়েকে এলাকার নাতির সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। না হলে মেরে ফেলা হবে।’
অভিযোগে ভুক্তভোগীর মা আরও বলেন, ‘বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওরা প্রথমে আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মেয়ের কক্ষে নিয়ে যায়। পরে মেয়ের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই নেয়।’
ওই নারীর মা আরও বলেন, ‘এ বিয়ে আমরা মানি না। আমরা আইনের আশ্রয় নেব। কিন্তু, আমরা খুব ভয়ে আছি।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রায় ছয় বছর আগে থেকেই ওই ছেলে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে বিয়ের কথা বলে। মাকে বেঁধে রেখে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। একপর্যায়ে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। যে কারণে বাধ্য হয়ে ভয়ে কাবিননামায় সই করেছি। সই নেওয়ার পর তাঁরা চলে যায়।’
ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া রায়হান উদ্দিন জানান, দোকান বন্ধ করে রাত ১০টার দিকে বাসায় ফিরি। সে সময় কয়েকজন আমাকে ডাক দেয়। বাইরে আসামাত্রই মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে একটি রুমে আটকে রাখে। পরে জানতে পারি, অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই নিয়ে চলে গেছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁদের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। মূল অভিযুক্তকে কল করা হলে তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘লোক মারফত খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
এই ঘটনায় আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাননি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।