ছেলে ও ভাতিজার পরিকল্পনায় ব্যবসায়ী খুন, গ্রেপ্তার ২
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলে ও ভাতিজার পরিকল্পনায় ঘুমন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ীকে খুন করে দুর্বৃত্তরা। গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রায় দেড় বছর আগে এ খুনের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ মঙ্গলবার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার কোকসাইর এলাকার মো. আলম (৩৮) এবং একই জেলার ত্রিশাল উপজেলার মো. আরাফাত (২৬)।
পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন ভাংনাহাটি পশ্চিমপাড়া (নতুন বাজার) এলাকার গিয়াস উদ্দিন (৬০) বাড়ির পাশে অটোরিকশার গ্যারেজসহ অটোরিকশা তৈরি ও ক্রয়-বিক্রয় করতেন। ওই গ্যারেজে ভাড়ার বিনিময়ে ব্যাটারি চার্জ করাসহ বিভিন্ন অটোরিকশা রাখা হতো। ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে প্রতিদিনের মতো গ্যারেজের ভিতর একপাশে কাঠের চৌকির উপর ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। পরের দিন সকালে সেখান থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ প্রায় তিন মাস মামলাটি তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে পরবর্তী তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুরের পিবিআইকে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও জানান, পিবিআইয়ের তদন্তকালে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার দিনগত ভোররাতে পাগলা থানার কোকসাইর এলাকা থেকে মো. আলমকে এবং গাজীপুরের কেওয়া এলাকা থেকে মো. আরাফাতকে গ্রেপ্তার করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক হাফিজুর রহমান। গতকাল তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা নিজেরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্বীকার করে অন্য আসামিদের নাম উল্লেখ করে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর চাঞ্চল্যকর গিয়াস উদ্দিনকে হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ভিকটিম গিয়াস উদ্দিনের গ্যারেজে অটোরিমা রাখতেন। জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশি সাহাবুদ্দিন গংয়ের বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার ছেলে আবুজর (৩২) এবং ভাতিজা সবুজ (৩২)। সবুজ একই এলাকার মো. সিরাজের ছেলে। পরিকল্পনানুযায়ী ঘটনার রাতে ছেলে ও ভাতিজা এবং আলম ও আরাফাত তাদের সহযোগিদের নিয়ে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গিয়াস উদ্দিনকে খুন করেন। পরে গ্যারেজে রাখা অটোরিকশার কয়েকটি ব্যাটারি নিয়ে একটি অটোরিকশাযোগে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া দুজন।