ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে খুন করেন বাবা
জামালপুরে ঈদুল আজহার পরের দিন অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ছোট ছেলে এবং আরো দুজনকে নিয়ে বড় ছেলেকে খুন করেন বাবা। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মো. আক্তারুজ্জামান দুদু ও কাষ্টসিংগা গ্রামের রুবেল মিয়া এবং নিহতের ছোটভাই আরিফুল ইসলাম।
জেলা পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, ঈদুল আজহার পরের দিন সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়দিঘুলী এলাকায় একটি কালভার্টের পাশে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হলে নিহতের বাবা পরের দিন জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এসে লাশটি তাঁর বড় ছেলে আল আমিনের বলে নিশ্চিত করেন। এরপর নিহতের বাবা গত ৫ আগস্ট বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন। হত্যার কারণ অনুসন্ধানের পর পুলিশ জানতে পারে নিহত আল আমিন মাদকাসক্ত ছিলেন।
এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১০ আগস্ট নিহতের ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুল জানান, মাদকাসক্ত হওয়ায় বড় ভাইকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদের দিন আগে থেকেই তাঁর বাবা মো. আমিরুল ইসলাম, নানা মো. আক্তারুজ্জামান দুদু ও রুবেল মিয়া সদর উপজেলার ছোনটিয়া এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসার কথা বলে ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম বড় ভাই আল আমিনকে মোটরসাইকেলে করে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া নিহতের বাবা ও অপর দুইজন আল আমিনের হাত-পা বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায়।
নিহতের ছোটভাই আরিফুল ইসলামের কাছ থেকে হত্যার স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. আক্তারুজ্জামান দুদু ও রুবেল মিয়াকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনেরই ঘটনার একই রকম বর্ণনায় জানা যায় নিহতের বাবা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
পুলিশ সুপার আরো জানান, আদালতে সোপর্দের পর ওই তিনজনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা মামলা করলেও তিনি এখন আসামি হয়ে যাবে। তাঁকে গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।