জুরাইনে মা-বাবার পাশে শেষ ঘুম চেয়েছেন খোকা

ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার শেষ ইচ্ছে ছিল রাজধানীর জুরাইনে মা-বাবার কবরের পাশে যেন তাঁকে সমাহিত করা হয়। আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকার পৈতৃক বাড়িতে এ কথা বলেন খোকার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল।
আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমি একজন ভাই হিসেবে গর্ববোধ করছি। তিনি (সাদেক হোসেন খোকা) একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অনেক সাহসী ভূমিকা রাখেন। দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। কারো সঙ্গে কখনো আপস করেননি।’
বড় ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উজ্জ্বল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার ভাই কখনো আমার সঙ্গে ধমক দিয়ে কথা বলেননি, কথা কাটাকাটি করেননি। আমি তাঁকে সম্মান করতাম। তিনি আমাকে স্নেহ করতেন। দুঃখ পেয়েছি। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশে আসতে পারেননি। তাঁর পাসপোর্ট রেখে দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’
সাদেক হোসেন খোকার রুহের মাগফিরাত সবাইকে দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে উজ্জ্বল বলেন, ‘সবার কাছে বলব, সবাই যেন তাঁর জন্য দোয়া করেন। আমার বলার কিছুই নেই, বলার শক্তিও নেই, আমি কী হারালাম। এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসা করুন, তাঁর মতো এমন বিনয়ী লোক আর আছে কি না?’
কবর দেওয়া প্রসঙ্গে সাদেক হোসেন খোকার ভাই বলেন, ‘আমার মা-বাবার কবর জুরাইনে। ভাইয়ের (সাদেক হোসেন খোকা) শেষ ইচ্ছে ছিল মা-বাবার কবরে পাশে যেন তাঁকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু এখনো ফাইনাল কোনো কিছু হয়নি। ভাবি (খোকার স্ত্রী) আসুক, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’
বীরমুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ম্যানহাটনে স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সাদেক হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। গত ২৮ অক্টোবর শারীরিক অবস্থার অবনতির পরই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিনই বাবার পাশে থাকতে নিউইয়র্কে যান ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও পরিবারের সদস্যরা।
সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনীর সদস্য সাদেক হোসেন খোকা ২০১৪ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তার পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছিলেন বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা।
সেখানে অবস্থানকালে বিএনপির এই নেতার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় গতকাল রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাবেক মেয়রের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য সরকারের উদ্যোগ ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
তার কিছু সময় পরই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।