জেয়াদ আল মালুমের ‘গার্ড অব অনারে’ নেতৃত্ব দিলেন নারী
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) না রাখতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, মন্ত্রণালয়ও কমিটির সুপারিশ আমলে নেয়নি।
আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বীর মুক্তিযোদ্ধা জেয়াদ আল মালুমকে গার্ড অব অনারে নেতৃত্ব দিয়েছেন এক নারী সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসিল্যান্ড)।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জানাজা হয় জেয়াদ আল মালুমের। এরপর ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। গার্ড অব অনারে নেতৃত্ব দেন এসিল্যান্ড মারুফা সুলতানা খান হীরামনি।
সম্প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বিকল্প চেয়ে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। কমিটি এক্ষেত্রে যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন, সেখানে কোনো পুরুষ কর্মকর্তা দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করার কথা বলে। পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদান দিনের বেলায় আয়োজনের সুপারিশ করা হয়। গত ১৩ জুন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এদিকে নারী ইউএনওকে বাদ দিয়ে পুরুষ দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়ার সংসদীয় কমিটির সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিটও দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
রিট আবেদনের শুনানিতে আদালত বলেছেন, বিষয়টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ মাত্র। এমন সুপারিশ গেজেট আকারে প্রকাশিত হলে তখন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়া হবে। তাই সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
রিটকারী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মাঝে মাঝে এমন সব সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন যা শুনলে মনে হয় তারা ফতোয়া দিচ্ছেন। দিনে দিনে তারা ফতোয়া দেওয়া কমিটিতে পরিণত হচ্ছেন।
মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফএলএডি)-এর আইন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম এ রিট দায়ের করেন। রিটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে বিবাদী করা হয়েছে।