ঝিনাইদহে ধানের আমদানি বাড়ছে, কমছে দাম
ঝিনাইদহের হাটবাজারে ধানের আমদানি বাড়ার ফলে দাম কিছুটা কমছে। আড়তদারেরা বলেছে বাজারে প্রচুর ধান আমদানি। ফলে ধানের দাম কমতে শুরু করেছে।
জেলায় প্রতি মণ ধানের বিক্রিমূল্য কমেছে গড়ে ৫০ টাকা। গত চার থেকে পাঁচ দিনে আগেও যে ধান প্রতি মণ এক হাজার ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই ধান এক হাজার ১০ থেকে ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষকরা এরই মধ্যে মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তুলেছে। এখন বিক্রি শুরু করেছে তারা। প্রথম দিকে গতবারের চেয়ে বাজার দরও কিছুটা বেশি ছিল। হঠাৎ বাজারে আমদানি বেড়ে গেছে। এ অঞ্চলের বড় ধানের হাট বসে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা, তেতুলতলা, হাট গোপালপুর বাজারে। এসব হাটের আড়তগুলোতে প্রতিদিনই ধান কেনাবেচা হয়ে থাকে। কৃষকরা সরাসরি ধান হাটে নিয়ে আসে। ফরিয়ারা দরদাম করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকায় ধান কিনে থাকে। স্থানীয় চাল মিল মালিকরাও সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে থাকে। দেশের বিভিন্ন এলাকার ফরিয়ারা বাজারগুলোতে ছুটে আসছে। বাঁশমতি, স্বর্ণা, ব্রি-২৮সহ নানা জাতের ধানে এখন বাজার ছয়লাব। আড়তদারেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত আমদানির কারণে বাজার দর আরও পড়ে যেতে পারে। তবে উৎপাদন তুলনামূলক বেশি হওয়ার ফলে কৃষকদের মন খারাপ হওয়ার কারণ দেখছে না আড়তদারেরা।
এদিকে, জেলা কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, আবহওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বোরো উৎপাদন লাভজনক হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ মাঠে উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এতে করে এবার বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেইসঙ্গে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের দিকে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াই কাজে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার করেছেন কৃষকরা।
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, বোরো মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ধান চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল ৭৭ হাজার ৭৪৪ হেক্টর। চাষ করা হয়েছে ৮০ হাজার ২৮৪ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদন হয়েছে পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ১৭ মেট্রিক টন। কৃষকরা ধান চাষ করে অন্য বারের চেয়ে লাভবান হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে তারা।
কৃষকরাও সচেতন হতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।