টানা পঞ্চমবারের মতো কাউন্সিলর হলেন ইদু
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) আদর্শের সমর্থক হলেও রাজনীতির সঙ্গে তেমন একটা সক্রিয় নন। সেইসঙ্গে জীবনযাপন করেন অতি সাধারণভাবে। তার পরও ইসমাইল হোসেন ইদু একবার দুবার নয়, টানা পাঁচবার কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভাসহ জেলার আটটি পৌরসভায় তো নয়ই বাংলাদেশের অনেক পৌরসভাতেও এ ধরনের সাফল্য বিরল। ইসমাইল হোসেন ইদুর এই অসামান্য কীর্তিতে আনন্দিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাঁর এলাকার ভোটাররা।
এলাকার মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ এবং পরোপকারী মানসিকতার কারণে জনগণের চাপেই তিনি ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের মাঠে নামেন। নিজের সামর্থ্য না থাকায় জনগণই তাঁর নির্বাচনের সব দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। ফলে জনগণের অপরিসীম ভালোবাসায় প্রথমবারই বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনেই তিনি সততা ও দক্ষতার দ্বারা সবার মন জয় করে নেন। পরে ২০০৩ ও ২০১০ সালেও তিনি বিপুল ভোটে পুনরায় নির্বাচিত হন। কর্মদক্ষতার কারণে ২০১০ ও ২০১৫ সালে জয়লাভের পর এ দুই আমলে তিনি প্যানেল মেয়রের দায়িত্বলাভ করেন এবং সফলতার পরিচয় দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও ইসমাইল হোসেন ইদু জয়ী হয়ে বিজয়যাত্রা অব্যাহত রাখেন।
তাঁর নির্বাচনী এলাকার ভোটার রেজাউল করিম বলেন, ‘ইসমাইল হোসেন ইদু একজন সহজ সরল মনের ভালো মানুষ। কোনো লোভ-লালসা নেই। যেকোনো সময় কাছে পাওয়া যায়।’
সারোয়ার জাহান শাহান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাউন্সিলর ইদু যেকোনো সমস্যায় আন্তরিকতার সঙ্গে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। সাধ্যে না কুলালে করতে না পারলেও কখনো কারো অনিষ্ট করেন না। ২২ বছর আগে কাউন্সিলর হওয়ার আগে যা ছিলেন, এখনো তেমনি আছেন।’
জেলা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাকুয়াইল এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে মা, স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা নিয়ে ৫০ বছর বয়সী ইসমাইল হোসেন ইদুর সংসার। প্রায় ১৩ বছর আগে তাঁর বাবা মারা যান। সমাজসেবায় ব্যস্ততার কারণে নিজে কিছু না করতে পারায় ছোটখাট ব্যবসা করা ছোট ভাইয়ের সামান্য উপার্জনেই তাঁর সংসার চলে। কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজ এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ ছাড়া পুরান কাচারী জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ, সামাজিক সংগঠন সৃষ্টি নবীন মেলার সভাপতি, রাকুয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহসভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমি, ডায়াবেটিক সমিতি, শহর সমবায় সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন।
নিজের সম্পর্কে ইসমাইল হোসেন ইদু বলেন, ‘অর্থ-বিত্তের প্রতি আমার কোনো মোহ নেই। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসাই আমার বড় সম্পদ। যত দিন সাধ্যে কুলায় মানুষের সেবা করে যাব।’