দিনাজপুরে সেনাবাহিনীর ব্যতিক্রমী পশুর হাট
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরপর পবিত্র কোরবানির ঈদ। আর তাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দিনাজপুর সদরের মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথমবারের মতো ‘ওয়ান ওয়ে আদর্শ পশুর হাট’ জমে উঠেছে। দূর-দূরান্ত থেকে এই হাটে আসছে গোবাদি পশু।
ঘিঞ্জি এলাকা রেলবাজার থেকে হাটটি স্থানান্তর করে শহরের মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বসানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষ চলাচল, গরু-ছাগলের আলাদা আলাদা জায়গা, টাকা শনাক্ত করার বুথ, পুলিশ বক্স ও শরীরের তাপমাত্র মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানার রয়েছে। প্রতিদিনই এই হাট বসবে বলে জানান কমিটির ইজারাদার তৈয়ব চৌধুরী।
সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ১৬ ব্রিগেডের অধীনস্থ ফোর হর্স ইউনিট ব্যতিক্রমী এই হাটের আয়োজন করে। হাটের গেটে ক্রেতা বিক্রেতার জন্য জীবাণুনাশক স্প্রে, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে পশু কেনাবেচার ব্যবস্থা করেছে সেনাবাহিনী। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে আসবে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থান নির্বাচনের পর থেকে সেনাবাহিনী নজরদারি ও মনিটরিং করে আসছে। হাটের এক গেট দিয়ে ব্যাপারীদের গরু ও খাসি নিয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে এবং অপর গেট দিয়ে পশু কিনে বের হয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা।
হাট ইজারাদার, জেলা প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ সবাই হাটের ব্যবস্থাপনা দেখে খুশি। এ ছাড়া হাটে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। সেখানে পশু অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ফোর হর্সের ক্যাপ্টেন ইসতিয়াক আরাফাত বলেন, ‘সারা দেশসহ দিনাজপুরে যেভাবে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে এতে আমরা কেউ নিরাপদ নই। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওয়ান ওয়ে আদর্শ পশুর হাটের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। দিনাজপুরের ৫৯টি পশুর হাটের মধ্যে বেশিরভাগ বড় হাট আমরা তদারকি করছি। এতে করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা সাহিনুর আলম জানান, জেলায় কোরবানি উপলক্ষে প্রায় দুই লাখ গোবাদি পশু বিক্রি হয়ে থাকে। জেলায় ২৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। মোট খামারির সংখ্যা প্রায় আট হাজার। প্রান্তিক চাষি রয়েছে ৫০ হাজার।
এবারের কোরবানিতে খামারি ও প্রান্তিক কৃষক লোকসানের মুখে পড়বে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গরুর দাম না পাওয়া এবং বিক্রি না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে করোনাভাইরাসের বিস্তার এবং দফায় দফায় বন্যাসহ মানুষের কাজ না থাকাকেই দায়ী করেছেন খামারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ।