দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, দুই পুলিশসহ আহত ২০
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় নিহতদের তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্তকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় স্বজন ও সতীর্থরা নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই ছিনিয়ে নিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যান চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারে মদের বোতল পাওয়া যায়। এতে পুলিশের ধারণা হয়, আরোহীরা হয়তো মদ্যপ ছিল। যে কারণে বেপরোয়াগতিতে প্রাইভেটকার চলায় দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর চিতষী-হাসনাবাদ সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চিতষী-চাটখিল সড়কে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পুকুরে পড়ে গেলে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার শাহপরান তুষার (২২), শাকিল হোসেন (২৬) ও রেজাউল (২৪), যশোর জেলার শার্শা থানার নয়ন (২৫) ও গাজীপুর সদরের উত্তর খাইলপুর গ্রামের সাগর হোসেন (২৪) নিহত হন। প্রথম তিনজন জেলা এবং স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা।
স্থানীয়রা জানায়, দুর্ঘটনায় মনোহরগঞ্জের তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করতে প্রশাসনের কাছে যায় স্বজনরা। তবে এতে তারা ব্যর্থ হয়। পরে বিকেলে উঘারিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে নিহতদের মরদেহ শাহরাস্তি থানায় নেওয়ার পথে স্বজনরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মরদেহ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা সংঘর্ষের পর পুলিশ ওই তিনজনের মরদেহ নিয়ে থানায় চলে আসে। এ সময় পুলিশসহ অনেকে আহত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা বেশ কিছু দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলার খবর পাওয়া যায়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি। সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।