‘দুর্যোগে দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীরা গণদুশমন’, রুখে দিতে বললেন নাসিম
যেসব অসাধু ব্যবসায়ী দুর্যোগের সময় অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করেন, তাঁদের গণদুশমন আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবনে আজ বৃহস্পতিবার মুজিববর্ষের কর্মসূচির পুনর্বিন্যাস নিয়ে ১৪ দলের সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানান নাসিম।
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম বলেন, ‘এই জনগণের মধ্যে কেউ তাদের ভাই হতে পারে, বোন হতে পারে, সন্তান হতে পারে। তাদের কেন কষ্ট দেওয়া হবে? এটি তো কোনো দায়িত্ববোধের পরিচয় না। এরা কোনোভাবেই দেশের স্বার্থে কাজ করে না। আমি অনুরোধ করব, এই গণদুশমনদের রুখে দেওয়ার জন্য।’
এদিকে করোনার কারণে বিএনপির কর্মসূচি স্থগিত করায় দলটিকে ধন্যবাদ জানান মোহাম্মদ নাসিম। করোনা সংকট মোকাবিলায় অহেতুক সমালোচনা না করে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
করোনা প্রতিরোধের সমালোচনা না করে সরকারকে সহযোগিতা করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসিম বলেন, ‘বিএনপির বন্ধুদের বলব, এখন রাজনীতি করার সময় নয়। আপনারা এগিয়ে আসুন। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই যে, আপনারাও কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। এখন দেশের এই পরিস্থিতিতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, ‘বাঙালি জাতি সাহসী জাতি। যেকোনো দুর্যোগে বাঙালি ঘুরে দাঁড়ায়। আমরা বিশ্বাস করি, আতঙ্কিত না হয়ে আবারও আমাদের সাহসের সঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’
এ সময় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ এবং আন্তরিকতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান মোহাম্মদ নাসিম। সেইসঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এবং চিকিৎসা দেওয়ায় চিকিৎসকদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
করোনার কারণে এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের দেশে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, ‘বিদেশে যাঁরা আছেন, আপাতত আপনারা সেই দেশের সরকারের পরামর্শ ও পদক্ষেপ অনুযায়ী সেখানে থাকেন। কারণ, ব্যাপকহারে প্রবাসীরা দেশে এলে জনগণের মধ্যে কিছুটা হলেও আতঙ্ক সৃষ্টি হবে।’
বিমানবন্দরে আরো সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বিদেশ থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের আরো সতর্কতার সঙ্গে স্ক্যানিং করতে হবে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে বিদেশ থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের অন্তত ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। কারণ, তাঁরা যদি দেশে এসে মানুষের সঙ্গে মিশে গ্রামেগঞ্জে ঘুরে বেড়ান এবং তাঁদের মধ্যে কোনো ভাইরাসের জীবাণু থাকে, তাহলে সেটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে।’
নাসিম জানান, করোনাভাইরাসের কারণে সরকার মুজিববর্ষের বিস্তারিত কর্মসূচি সীমিত করার কারণে ১৪ দলের পক্ষ থেকেও সীমিত কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে ১৭ মার্চ রাত ৮টার দিকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা। এ ছাড়া ১৭ মার্চ দুপুর ২টার দিকে ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল তরীকত ফেডারেশনের কার্যালয়ে দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২০ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা।
এ সময় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, উপদপ্তর সম্পাদক শামীম খান সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।