নতুন ধান আসছে আশুগঞ্জ মোকামে, দামে খুশি কৃষকরা
হাওরে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ধান-চালের মোকামে নতুন ধান আসতে শুরু করেছে। আশুগঞ্জের মোকামে নতুন ধান আসতে শুরু করেছে। এখানে প্রতিমণ আটশ থেকে সাড়ে আটশ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে, আশুগঞ্জে চাতাল ব্যব্সায়ীরা এ দামে ধান কিনে চাল উৎপাদন করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে হতাশা ব্যক্ত করেন।
প্রাচীনকাল থেকেই দেশের অন্যতম বৃহৎ ধানের মোকাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে আশুগঞ্জ। দেশে চালের চাহিদার একটা বিশাল অংশ আশুগঞ্জে উৎপাদিত চাল দিয়ে পূরণ করা হয় বলে এখানকার চাতাল ব্যবসায়ীরা দাবি করেন।
ধানের এ মোকামটি মূলত হাওর অঞ্চলনির্ভর। প্রতি বছর এ সময়ে প্রতিদিন হাওর অঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নদীপথে এ মোকামে হাজার হাজার মণ ধান আমদানি হয়। আশুগঞ্জে চাতাল ব্যবসায়ীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার ও বেপারীরা এ মোকামে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ধান কেনাবেচা করে থাকে। হাওর থেকে ধান কিনে এনে এখানে বিক্রি করছে কৃষক, ব্যবসায়ীরা। নতুন ধানের ন্যায্যমূল্য পেয়ে খুশি কৃষকরা।
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার কৃষক হোসেন আলী বলেন, ‘কৃষকরা অনেকদিন পর ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে এইবার। এতে কৃষকরা খুশি। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের সবসময় ন্যায্যমূল্য পায় সরকার যেন এই ব্যাপারে একটা নীতিমালা করে। যাতে কৃষকদের ক্ষতির মুখে না পড়ে। মূলত কৃষক হচ্ছে দেশের প্রাণ। এই কৃষক যদি তাদের উৎপাদিত শস্যের সঠিক দাম পায় তাহলে উৎসাহিত হবে।’
এ বিষয়ে আশুগঞ্জে চাতাল কল মালিক কামরুল হাসান রবিন বলেন, ‘বর্তমানে আশুগঞ্জের মোকামে আটশ থেকে নয়শ টাকায় প্রতিমণ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে। এই অবস্থায় চাতাল মিল মালিকরা ধান কিনে চাল উৎপাদন করে লোকসান দিতে হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ ধান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতা হাজি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ দামে ধান কিনলে মিল মালিকদের লোকসান দিতে হবে। কারণ নতুন ধান বাজারে আসায় প্রতিমণ চালের মূল্য প্রতিদিন একশ টাকা করে কমে আসছে। কখন এই চালের মূল্য স্থিতিশীল হবে আমরা তা জানি না। কাজেই সরকারের উচিত হবে ধানের একট মূল্য বেঁধে দেওয়া।’
শিপন মিয়া নামের একজন মিল মালিক বলেন, ‘নতুন ধানের দাম বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ কৃষকরা এখন বিক্রি করতে চাচ্ছে না। ফলে অন্য বছর এ সময়ে প্রতিদিন নব্বই হাজার থেকে এক লাখ মণ ধান আশুগঞ্জ মোকামে আসত। সেখানে এই বছর পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার মণ ধান আসছে। এ অবস্থায় আশুগঞ্জে ধানের মোকামের চাতাল কল মালিকরা লোকসান গুণতে হচ্ছে। আমাদের দাবি, সরকার যেন দ্রুত ধানের একটা গ্রহণযোগ্য মূল্য বেঁধে দেয়।’