বোরো ধানের বাম্পার ফলন, তবুও নেই কৃষকের মুখে হাসি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় লাভের মুখ দেখছেন না কৃষকরা। ফলে ফলনের খুশির বদলে তাদের মুখে ফুটেনি হাসি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোটালীপাড়ায় ২৬ হাজার ৭৯৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৩১৪ মেট্রিকটন। গত বছর এ উপজেলায় ২৬ হাজার ৬১৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। আর ধান উৎপাদন হয়েছিল ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৭৫ মেট্রিকটন।
গত বছরের চেয়ে এ বছর ১৭৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ বেশি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গত বছরের চেয়ে এ বছর ৮ হাজার ৩৯ মেট্রিকটন ধান বেশি উৎপাদন হবে বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে স্থানীয় হাটে প্রতি মণে ধান বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকায়। চাষিরা বলছেন, এই দামে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচই ওঠে না। সরকারি ক্রয়মূল্য বেশি হলেও সরকার যে পরিমাণ ধান কিনে, তা অপ্রতুল হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক এই সুবিধা পান না।
চিতশী গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদ শেখ বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু বাজারে দাম না থাকায় লাভ হচ্ছে না।’
কুরপালা গ্রামের আতা উল্লাহ শেখ বলেন, ‘সব ধান একসাথে পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকটে পড়েছি। একজন শ্রমিকের মজুরি ১ হাজার টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না।’
গুয়াখোলা গ্রামের কালীপদ দে অভিযোগ করেন বলেন, ‘প্রচুর ধান উৎপাদন হলেও সরকার উপজেলায় কম পরিমাণে ধান সংগ্রহ করে। তাই সংগ্রহের পরিমাণ বাড়াতে হবে।’
উপজেলা কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায় বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর কোটালীপাড়া উপজেলায় ১৭৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ বেশি হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে দরিদ্র কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ বিতরণের পাশাপাশি নিয়মিতভাবে প্রান্তিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রেখে কৃষি পরামর্শ দেওয়া হয়।
দোলন চন্দ্র রায় আরও বলেন, এ বছর ২ হাজার ৬০ মেট্রিকটন ধান সরকারিভাবে কেনা হবে। কোটা বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা করবো।