নিলয় হত্যা : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জের আলোচিত নয় বছরের শিশু আশিকুর রহমান নিলয় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আসামিরা হলেন- এরশাদ আলী ওরফে এরশাদ, আবুল কালাম ওরফে কালাম, আশরাফুল ইসলাম ওরফে কানা রিন্টু ও নুর মোহাম্মদ ওরফে কালা চোর ওরফে কালা ডাকাত।
আজ বুধবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ, অ্যাডভোকেট খবির উদ্দিন ভূইয়া। তাদের সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন জানান, ২০০৬ সালের ১২ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের সলংগা থানার ভরমোহনী গ্রামের আব্দুল হালিমের নয় বছর বয়সী শিশুপুত্র আশিকুর রহমান নিলয়কে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে ফেরত দেওয়ার কথা ঠিক হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসামিরা কথা রাখেনি। ছেলেকে ফেরত না পেয়ে পরদিন ১৩ জানুয়ারি আব্দুল হালিম থানায় এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারনামীয় চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৪ জানুয়ারি আব্দুল খালেকের বাড়ি সংলগ্ন ল্যাট্রিনের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে শিশু নিলয়ের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আসামি এরশাদ আলী এবং নুর মোহাম্মদ ওরফে কালু ওরফে কালা ডাকাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০৬ সালের ১৪ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলাটি রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়। বিচার শেষে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৮/৩০ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় চার আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ড কনফারমেশনের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে। চার আসামির মধ্যে একজন নিয়মিত আপিল দায়ের করেন এবং বাকি তিনজন জেল আপিল দায়ের করে। সবগুলো আপিল ও ডেথ রেফারেন্স একত্রে শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রেখে চার আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড দেন।
হাইকোর্টের রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে আপিল বিভাগে একজন আসামি নিয়মিত আপিল দায়ের করে এবং তিনজন জেল আপিল দায়ের করেন।